Categories
ভেষজ গাছ

বাসক পাতার উপকারিতা

আমাদের প্রকৃতির মধ্যে রয়েছে অসংখ্য ঔষধি গাছ, যেগুলো শুধু পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা পালন করে না, সাথে বিভিন্ন ভাবে আমাদের উপকার করে।‌ আজকে এই বাসক পাতার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হবো। আদিকালে মানুষ যেকোন রোগ নিরাময়ে ভেষজ চিকিৎসা সেবাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকতেন, কালের বিবর্তনে এর চাহিদা মানুষের কাছে কিছুটা কমে গেলেও হারিয়ে যায় নি সেসব ঔষধি গাছের গুন।

আমাদের সকলেই যেসব উপকারী গাছের কথা জানি সেগুলো হল বাসক, নিম, তুলসী, অর্জুন ইত্যাদি। তবে আজকে যে গাছটি নিয়ে বলতে যাচ্ছি তা হলো ” বাসক গাছ” যাকে কোনভাবেই বাদ দেয়া যায় না।আদিযুগ থেকে বাসক গাছ বহু গুণে গুণান্বিত। এটি মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের একটি অন্যতম ভেষজ উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম “Justicia Adhatoda” এবং ব্যাবসায়িক নাম বাসক। কান্ড, পাতা , গাছের ছাল , ফুল সবকিছু মূল্যবান ভেষজ চিকিৎসা সেবা প্রদানে ভূমিকা পালন করে। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যবাসে যদি এক অথবা দুইটি বাসক পাতা খাওয়া যায় তবে শরীরে এটি বিভিন্ন রোগের উপশম হিসাবে কাজ করবে। এছাড়া ঔষধ হিসাবে এর বহূবিধ ব্যাবহার রয়েছে।

বাসক পাতার উপকারিতা

বাসক গাছের পাতাটির বহুবিধ ব্যবহার এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে।‌ বাসক পাতার মধ্যে ভ্যাসিনিন‌ নামক এক ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা অনেক রোগের ঔষুধে ব্যাবহার করা হয়। এছাড়াও নানা ধরনের এসেনসিয়াল অয়েল রয়েছে। বাসক পাতার উপকারিতার কথা বলতে গেলে যেসব রোগের প্রতিষেধক হিসেবে এইগুলো

ব্যাবহার করা সেগুলো হল: বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। ঋতুর পরিবর্তনের ফলে আমাদের দেশে প্রায় সবারই ঠান্ডা, কাশি, জ্বর লেগেই থাকে। এহ্মেত্রে যদি বাসক পাতার বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে । পুরানো সর্দি কাশি কমাতে বাসক পাতার রস সেবনে উপকার পাওয়া যায়। যেহুতু বাসক পাতার রস তিতা এই কারনে সাথে মধু মিশিয়ে খেলেও চলবে। মধু বরাবরই ঠান্ডার জন্য উপকারী। তবে এই হ্মেত্রে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে উপকার পাওয়া যায় এবং খাওয়ার পর অন্তত এক গ্লাস পানি পান করতে হবে। তাছাড়া জ্বর হলে তাপমাত্রা কমাতে বাসক পাতা সাহায্য করে। শিশুদের পেটে কৃমি হলে বাসকের ছালের রস খাওয়ানো হলে বাসকের তিক্ততার কারণে কৃমি দূর হয়ে যায় ‌। শ্বাসকষ্ট সমস্যা দূর করতেও বাসক পাতার ভূমিকা রয়েছে। এহ্মেত্রে বাসক পাতা শুকিয়ে ঐ পাতা চরুটের মতো পাকিয়ে ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে সাহায্য করে।

যাদের খিচূনি রোগ রয়েছে তারা যদি বাসক পাতার রস নিয়মিত সেবন করে তাহলে খিচূনি রোগ দূর হয়ে যায়। আজকাল অনেকেরই ইউরিন ইনফেকশন (প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া) সমস্যা হয়ে থাকে, এহ্মেত্রে মেডিকেল চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যায়বহুল। কিন্তু মেডিকেল চিকিৎসা সেবার বিকল্প হিসেবে বাসকের ফুল বেটে ২/৩ চামচ ও ১/২ চামচ সরবত করে খেলে এই রোগের উপকার পাওয়া যায়। অনেকেরই দাদ বা চুলকানি সমস্যা থাকে। এই সমস্যা দূর করতে বাসকের কচি পাতার সাথে যদি কাঁচা হলুদ বেটে দাদ বা চুলকানিতে লাগালে চুলকানি সেরে যায়। জন্ডিস নিরাময়ে বাসক পাতার ভূমিকা রয়েছে।

বাসক পাতার বা ফুলের রস ১/২ চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে জন্ডিস নিরাময়ে সাহায্য করে। অনেকেরই ভিটামিন এর অভাবে দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত বের হয়। দাঁতের এই সমস্যা দূর করতে যদি কেউ বাসক পাতা ছেঁচে পানিতে ফুটিয়ে কুসুম গরম থাকা অবস্থায় কুলকুচি করে তাহলে ফল পাওয়া যায়। গলাব্যাথা বা কাশির সমস্যা থাকলে বাসক পাতার রসে‌ উপকার পাওয়া যায়। সৌন্দর্য বর্ধনে বাসক পাতার ব্যাবহার হয়ে থাকে। বাসকের রসের সাথে শংঙ্খচূর্ণ মিশিয়ে মুখে লাগালে রং ফর্সা হয়। অনেকেরই শরীরের মধ্যে দুগন্ধ থাকে এই সমস্যা দূর করতে বাসক পাতার কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে দুর্গন্ধ দূর হয়।

আমাদের শরীরের মধ্যে রক্ত পরিস্কার না থাকলে মুখে ব্রন, পেটে সমস্যা, এলার্জি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। বাসক পাতার রস নিয়মিত সেবন করলে রক্ত পরিস্কার হয়, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বেড়ে যায়, রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। শরীরের মধ্যে ব্যাথা বা কাজ করতে গিয়ে শরীরের কোন অংশে মাংস পেশীর মধ্যে টান লাগলে সেহ্মেত্রে চুন হলুদ করে এর সাথে বাসক পাতা বেটে মালিশ করলে আরাম পাওয়া যায়।

আমাদের দেশে অনেক মেয়েদেরই অনিয়মিত মাসিক সমস্যা থাকে অথবা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, তলপেটে ব্যথা করে। এইজন্য বাসক পাতা খেলে উপকার পাওয়া যায়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের বাসক পাতার অবদান রয়েছে। গ্ৰামীন দরিদ্র নারীরা প্রতিদিন শত শত বাসক পাতা সংগ্রহ করে শুকানোর পরে ৩০/৪০ কেজি দরে বিক্রি করতে পারে। বাংলাদেশ বর্তমানে বিভিন্ন উপজেলায় বেশ কিছু গ্ৰামে যেমন: রংপুরের পীরগঞ্জের পানোয়া গ্ৰাম, জাহাঙ্গীরাবাদ, পাইতান, এনায়েতপুর, শাহপুর, কেশবপুর, শাহেদুপুর, নাসীরাবাদসহ অত্যন্ত পনেরোটি গ্ৰামে বাসক চাষ হয়।

বাসক পাতা খাওয়ার নিয়ম: যে গাছের গুন নিয়ে এতো কথা হয়েছে আসুন জেনে নেয়া যাক ঔষধ হিসেবে এই গাছের উপাদানসূমহ আমরা কি ভাবে খেতে পারি। বাসক পাতা গুনের কথা শুনতে যতটা মিষ্টি বা ভালো লাগবে খাবারের বেলায় তার উল্টো।‌বাসক পাতা প্রচন্ড তেতো হয়ে থাকে। নানাভাবে বাসক পাতা খাওয়া গেলেও বেশিরভাগ হ্মেত্রে ঔষধ হিসেবে বাসক পাতার রস খাওয়ানো হয়ে থাকে। অপরদিকে বাসক‌ পাতা গরম জলে ফুটিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যায়। পাতার রস খাওয়ার হ্মেত্রে পাতা ভালো করে ধুয়ে বেটে নিতে হবে, প্রতি এক চামচ পাতার রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলেও সেহ্মেত্রে উপকার পাওয়া যায়। যদি কেউ বাসক পাতার জল খেতে চায় ঐহ্মেত্রে পাতা ভালো করে ধুয়ে পানিতে ফুটিয়ে, পানি ঠাণ্ডা করে ছেঁকে খাওয়া উচিত।

বাসক গাছের চাষ পদ্ধতি

বাসক গাছটি বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে যেমন‌ ভারত, শ্রীলঙ্কা, কলোম্বিয়া, মালোশিয়াতে এই গাছটি পাওয়া যায়। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বাসক পাতার চাষ করে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সাবলম্বী হয়ে উঠেছে। বাসক পাতা চাষে আলাদা যত্নের প্রয়োজন হয় না।সমতল ভূমিতে যেখানে লোকালয়ের উপস্থিতিতে এই গাছ জন্মে থাকে। যার ফলে গ্ৰামীন দরিদ্র মানুষজন বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার পাশে এই পাতা চাষ‌ করে অর্থ উপার্জন করতে সহ্মম হচ্ছে। বাসক গাছটি চাষের হ্মেত্রে ১/২ টি কাটিং গর্তে রোপন করতে হবে।

গর্তে পযাপ্ত পরিমাণ গোবর সার দিতে হবে। প্রথম‌ ছয় মাস থেকে পাতা সংগ্রহ করা যাবে। সংগ্ৰহ করার পরে ২/৩ ঘন্টা ছায়ায় রেখে পাতা শুকিয়ে নিতে হয়। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক গাছ থেকে তিন মাস পর পর পাতা সংগ্রহ করা যায়।গ্ৰামীন দরিদ্র নারীরা প্রতিদিন শত শত বাসক পাতা সংগ্রহ করে শুকানোর পরে ৩০/৪০ কেজি দরে বিক্রি করতে পারে। বাংলাদেশ বর্তমানে বিভিন্ন উপজেলায় বেশ কিছু গ্ৰামে যেমন: রংপুরের পীরগঞ্জের পানোয়া গ্ৰাম, জাহাঙ্গীরাবাদ, পাইতান, এনায়েতপুর, শাহপুর, কেশবপুর, শাহেদুপুর, নাসীরাবাদসহ অত্যন্ত পনেরোটি গ্ৰামে বাসক চাষ হয়।

কেন বাসক পাতা ব্যাবহার করব: বাসক পাতার এতো উপকার কথা শুনে আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন পরবর্তীতে উপরিউক্ত কোন একটি সমস্যা হলে বাসক পাতার ব্যাবহার করবেন। বাসকের পাতা যেকোন রোগ নিরাময়ে ব্যাবহার করলে শরীরে তৎহ্মণাত কাজ করতে সাহায্য করে।বাসক পাতার মধ্যে হ্মারের পরিমাণ বেশি হওয়ার ফলে কোন পোকা মাকড় ধরে না, এমনকি ছত্রাক ও জন্মায় না যার কারণে সংরক্ষণ করা যায় এবং প্রয়োজনে ঔষুধ হিসাবে ব্যবহার করা যায়।
আরোও পড়ুনঃ জানলে অবাক হবেন পাথরকুচি পাতা খাওয়ার উপকারিতা

পরি সমাপ্তি: প্রত্যেক জিনিস এর যেমন উপকারী দিক আছে তেমনি আছে কিছু অপকারি দিকও। ব্যাবহারকারীকে ব্যাবহারের বেলায় অপকারিতা জেনে ব্যাবহার করতে হবে। যেমন: প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেলে পেট খারাপ সহ বমি ভাব হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বাসক পাতার উপকারিতা যেমন রয়েছে। তেমনি রয়েছে বাসক পাতার মধ্যে এমন কিছু হ্মারীয় পদার্থ রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। বাসক পাতা বেশি খেলে শরীরে শর্করার পরিমাণ কমে যায় তা ডায়েবেটিক হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করে। এইজন্য বাসক পাতা সেবনে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কেননা আমাদের অসতর্কতা আমাদের অস্বােস্থ্যর কারণ হতে পারে।

Categories
ভেষজ গাছ

জানলে অবাক হবেন পাথরকুচি পাতা খাওয়ার উপকারিতা

আপনি জানেন কি গুণা-গুণসম্পন্ন বিরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ হল পাথরকুচি। তাই পাথরকুচি পাতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই আজকের প্রতিবেদন।

সামান্য একটি গাছ কখনো কখনো হতে পারে আপনার জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উন্নত সমাজ ব্যবস্থা গঠনের পূর্বলগ্নে, মানুষজন তাদের রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতেন নানান ধরণের ভেষজ উপাদান। নানাবিধ জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি এই ভেষজ উপাদান সমূহ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে আমাদের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে।

আধুনিকায়নের ফলেও অনেক জটিল রোগ নির্মূল করার ক্ষেত্রে, অনেক জটিল স্বাস্থ্য-সমস্যা সমাধান করার ক্ষেত্রে কাজ করে থাকে ভেষজ উপাদানসমূহ। বাড়ির আশেপাশে প্রায়ই আমরা পাথরকুচি গাছ দেখতে পাই। কিন্তু আপনি কি জানেন কেউ গাছটি আমাদের জন্য ঠিক কতটা উপকারী। তাই আজকের আলোচনায় পাথরকুচি পাতার গুনাগুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পাথরকুচি পাতা খাওয়ার উপকারিতা

একটি ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে আমরা কমবেশি সকলে চিনি পাথরকুচি উদ্ভিদ সম্পর্কে। কিন্তু আপনি কি জানেন কি পাথরকুচি পাতার রয়েছে নানাবিধ উপকারিতা। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক পাথরকুচি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে-

খিঁচুনি অপসারণেঃ আপনি যদি খিচুনি কিংবা মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিয়মিত পাথরকুচি পাতার রস খেলে খুব তাড়াতাড়ি এই রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।

কোন বিষ নিরাময়েঃ বিভিন্ন বিষাক্ত পোকামাকড় আক্রমণ করলে আমাদের শরীরে বিষের প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাই এই বিষ নিরাময়ে আপনি খেতে পারেন পাথরকুচি। আশা করি উপকার পাবেন।

চফোঁড়ার সমস্যা সমাধানেঃ বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীরে ফোঁড়ার উপদ্রব দেখা যায়। ফোঁড়ার উপদ্রব দেখা দিলে পাথরকুচি সামান্য বেচে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিলে খুব সহজে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন।

জন্ডিসের সমস্যা সমাধানঃ জন্ডিস মূলত এক ধরনের পানিবাহিত রোগ। জন্ডিস লিভারে আক্রমণ করে আর লিভার আমাদের শরীরের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই আপনি যদি আপনার লিভারকে ভালো রাখতে চান এবং সেই সাথে আমি জন্ডিসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনি পাথরকুচি পাতার রস খেতে পারেন। এতে বেশ উপকার পাবেন।

ঠাণ্ডায় সমস্যা সমাধানেঃ হঠাৎ করে আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে আমাদের শরীরে ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা দেয়। আর ঠাণ্ডা কাশির এই সমস্যা সমাধানে আমরা নিয়মিত খেতে পারি পাথরকুচি পাতার রস। এতে খুব সহজে আমাদের হাঁচি কাশির সমস্যার সমাধান হবে।

উচ্চ-রক্তচাপ সমাধানেঃ হঠাৎ করে উচ্চ-রক্তচাপের প্রভাবে আমাদের শরীরে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। তাই উচ্চরক্তচাপের সমস্যা থেকে আপনি যদি মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনি নিয়মিত পাথরকুচি পাতার রস খেতে পারেন। নিয়মিত এই রস খেলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

শরীরে জ্বালাপোড়া রোধেঃ আপনার যদি শরীরে জ্বলাপোড়ার সমস্যা দেখা যায় তাহলে আপনি পাথরকুচি পাতা বেটে তা গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে আপনি খুব সহজে মুক্তি পাবেন এই সমস্যা থেকে।

পানিবাহিত রোগ প্রশমনেঃ আপনার নানা ধরণের পানি-বাহিত রোগ প্রশমনে বেশ কার্যকর হল এই পাথরকুচি পাতা। আপনি যদি পানি-বাহিত রোগ যেমনঃ কলেরা জন্ডিস , হয়ে থাকেন তাহলে আপনি জুস হিসেবে নিয়মটি খেতে পারেন এই পাতা। আশা করি খুব দ্রুত এই সমস্যা থেকে সমাধান পাবেন।

পাথরকুচি পাতা খাওয়ার নিয়ম

একটি ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে আমাদের সকলের কাছে পরিচিত এই উদ্ভিদ। সাধ্যের মধ্যে কাছেই পাওয়া যায় সবসময় বিধায় এই উদ্ভিদটির দিকে মানুষের কৌতূহল একটু বেশি।

পৃথিবীর প্রত্যেকটি খাবার গ্রহণের যেমন একটা নিয়ম রয়েছে, ঠিক তেমনি করে ওষুধের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। আমরা যখন কোন রোগবালাই দমনের জন্য কোন ধরণের ঔষধ খাই, সে ঔষধ খাওয়ার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ভেষজ উপাদানসমৃদ্ধ ঔষধ খেতে হলে আমাদের সেই নিয়মটি অনুসরণ করতে হবে। কারণ কোন ভেষজ উপাদান হল এক ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান। আপনি যখন কোন অর্গানিক উপাদান গ্রহণ করবেন তখন আপনাকে জানতে হবে ঠিক কত পরিমাণ উপাদান গ্রহণ করলে আপনার জন্য তা উপযুক্ত হবে। নতুবা বিরাট স্বাস্থ্য-ঝুঁকিতে পড়তে পারেন আপনিও।

তাই পাথরকুচি পাতা যদি আপনি খেতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে কোন ভেষজ চিকিৎসক থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। তবে আপনি প্রাথমিকভাবে পাথরকুচি খেতে হলে আপনাকে অবশ্যই পাথরকুচি পাতা খাওয়ার নিয়ম অনুসরণ করতে হবে-

  1. প্রথমে পাতাগুলোকে গাছ থেকে সংগ্রহ করে গরম পানি দিয়ে আলাদা করে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
  2. পাতাগুলো ধোয়া হয়ে গেলে সেই পাতাগুলোকে আপনি যদি বেটে খেতে চান সেক্ষেত্রে পাটা দিয়ে ভালোভাবে বেটে সাথে হাল্কা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
  3. আপনি যদি পাথরকুচি পাতার রস খেতে চান সেক্ষেত্রে আপনি প্রথমে পাতাগুলোকে ভালো করে ধুয়ে সে পাতাগুলো থেকে রস বের করে ,সেই রসের সাথে সামান্য মধু মিক্স করে খেতে পারেন।

পাথরকুচি পাতা কিভাবে খেতে হয়

নানা ধরণের সমস্যার একটি উপযুক্ত সমাধান হল পাথরকুচি। আমাদের বাড়ির আশেপাশে, রাস্তার ঝোপের ধাপে, রাস্তার পাশে দেখা মিলে এই গাছটি। কিন্তু শুধুমাত্র একটি সামান্য গাছ হিসেবে যদি আমরা এটিকে কল্পনা করি তাহলে ভুল হবে। নানান ধরণের শারীরিক সমস্যা সমাধানে কার্যকর হল এই ভেষজ উপাদানটি।

পাথরকুচি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক একটি ভেষজ উপাদান। তাই আপনি যদি আপনার শারীরিক সমস্যার জন্য এই উপাদান খেতে চান আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক পাথরকুচি পাতা কিভাবে খেতে হয় সে সম্পর্কে –

  • যেকোনো ধরণের ক্ষতস্থান এ কিংবা শরীরে যদি জ্বালাপোড়া হয় তখন আপনি সে সমস্যা সমাধানের জন্য সামান্য পাথরকুচি পাতা সংগ্রহ করে নিবেন। পরবর্তীতে সে পাতা আপনি গরম পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিবেন। পাতা পরিষ্কার করা ধোয়া হয়ে গেলে আপনি সে পাতা ভালো করে বেটে নিয়ম করে খেতে পারেন। আশা করি খুব সহজে সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
  • আপনি যদি আপনার শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কিডনিতে পাথর জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনি সেক্ষেত্রে খেতে পারেন পাথরকুচি পাতা। প্রথম পাথরকুঁড়ি পাতাগুলোকে ভালো করে ধুয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। ধোয়া হয়ে গেলে পাতাসমূহ রস সংগ্রহ করে সেই রস সকাল বিকাল নিয়ম করে খেলে এই সমস্যা সেরে যাবে।
  • হঠাৎ করে যদি আপনার গলা ফুলে যায় সেক্ষেত্রে সামান্য পাথরকুচির রস আপনার গলা ফুলার সমস্যা সমাধান করবে।
  • আপনার যদি ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থাকে তাহলে আপনি সামান্য পাথরকুচি পাতার রস খেতে পারেন নিয়মিত। আশা করি দ্রুত এই সমস্যা থেকে আপনি প্রতিত্রান পাবেন।
  • জন্ডিস মানব দেহের একটি পানিবাহিত রোগের নাম। তাই আপনি যদি জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিয়মিত পাথরকুচি পাতা বেটে তার রস খেলে খুব সহজে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

আরও পড়ুনঃ একটি চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা

পাথরকুচি পাতার অপকারিতা কি

পৃথিবীর প্রত্যেকটি জিনিসের একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। পাথরকুচি পাতা তার ব্যতিক্রম নয়। পাথরকুচি পাতা যেমন রোগ নির্মূলে উপকারী তেমনি এই পাথরকুচি পাতা আবার আমাদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তা কিভাবে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

  • আপনি যদি আপনার রোগ নির্মূলের কথা চিন্তা করে, নিয়ম না মেনে পাথরকুচি পাতা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে তাহলে আপনার মুখের স্বাদ নষ্ট হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • অত্যধিক পরিমাণে পাথরকুচি পাতার রস খেলে আমাদের পাকস্থলীর নানাবিধ জটিল সমস্যা দেখা যায়।
  • পিত্তথলি আমাদের মানব শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপনি যদি অতিরিক্ত পাথরকুচি পাতা গ্রহণ করেন তাহলে আপনার পিত্ত থলিতে তা পার্শপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।
  • আপনি যদি প্রাত্যহিক অতিরিক্ত পরিমাণে পাথরকুচি পাতা গ্রহণ করেন তাহলে আপনার খাবারে অরুচি দেখা দেবে। সেই সাথে ক্ষুধা মন্দার প্রভাব দেখা দেবে আপনার শরীরে।
  • অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। তাই আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে পাথরকুচি পাতা পথ্য হিসেবে গ্রহণ করে তখন আপনার শরীরে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা খাওয়ার উপকারিতা

পাথরকুচি গাছ লাগানোর নিয়ম

একটি উপকারী উদ্ভিদ হিসেবে আমাদের সকলের কাছে বেশ পরিচিত একটি বাম হল পাথরকুচি। পাথরকুচি পাতার নানা ধরনের উপকারিতা সম্পর্কে জানার ফলে আপনি যদি নির্দিষ্ট কোন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন সেসব সমাধান শুধুমাত্র পাথরকুচি করতে পারবে তাহলে আপনাকে অবশ্যই পাথরকুচি গাাছ আপনার নিত্যদিনের প্রয়োজনের জন্য সংগ্রহ করতে চাইবেন। আর বার বার পাথরকুচি পাতা খুঁজে বের করার চেয়ে আপনি অবশ্যই আপনার বাড়িতে পাথরকুচি গাছ থাকাটাই সমীচীন ভাববেন।

আপনি যদি আপনার বাড়িতে গাছ লাগাতে চান সেইজন্য আপনাকে অবশ্যই পাথরকুচি গাছ লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।চলুন জেনে নেই এই গাছটি লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে-

  • প্রথমে আপনি একটি পাত্র ভালোভাবে গোবর সার এবং মাটি মিক্স করে নিন।
  • কোন স্থান থেকে সামান্য একটি পাতা এনে ফেলে রাখুন মাটির উপর।
  • ২-৩ পর আপনি পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত পাথরকুচি গাছটি।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
পাথরকুচি আমাদের খুব পরিচিত অতি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ। বিভিন্ন ঘাতকবাহীরোগ প্রতিরোধে বেশ কার্যকর এই উদ্ভিদ। এই গাছ টি নিয়ে যতো কথা বলা হয়েছে সবই সত্য। তাই এই উদ্ভিদটিকে রক্ষা করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব।

Categories
ভেষজ গাছ

ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা খাওয়ার উপকারিতা

আমাদের আজকের প্রতিবেদন এর ভিতরে ঘৃতকুমারী নিয়ে আলোচনা করব। ঘৃতকুমারী নিয়ে আপনাদের মনের ভিতরে সকল প্রশ্ন আছে সেগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আমাদের আজকের আলোচনায় যা থাকবে সেগুলোকে নিচে দিয়ে দেওয়া হল দেখে নিন।

  • ঘৃতকুমারী
  • ঘৃতকুমারী গাছ
  • ঘৃতকুমারী খাওয়ার উপকারিতা
  • ঘৃতকুমারী গাছের গুনাগুন
  • ঘৃতকুমারী খাওয়ার নিয়ম
  • ঘৃতকুমারী বৈজ্ঞানিক নাম
  • ঘৃতকুমারী কোথায় পাওয়া যায়
  • ঘৃতকুমারী উপকারিতা
  • ঘৃতকুমারী গাছের উপকারিতা

ঘৃতকুমারী

ঘৃতকুমারী বহুজীবী ভেষজ উদ্ভিদ আর এইটা কেমন দেখতে অনেকেই আছেন যারা জানেন আবার অনেকেই রয়েছেন জানেন না, আর না জানলে ও কোন সমস্যা নেই। আমি আপনাদেরকে বলতেছি এটা দেখতে আসলে কিসের মত, আমাদের ভিতরে অনেকি আছি যারা আনারস গাছ দেখেছি। ঘৃতকুমারী হচ্ছে আনারস গাছের মতো অনেকটা।

আপনারা এই গাছের পাতাগুলো পুরু, দুধারে করাতের মত কাঁটা এবং ভিতরে লালার মত পিচ্ছিল শাঁস দেখতে পারবেন। কোন ধরনের মাটি বা কোনো ধরনের জমিতে আপনারা ঘৃতকুমারী চাষ করতে পারেন কোন সমস্যা হবে না।

আপনারা যদি দোআঁশ কিংবা অল্প বালি মিশ্রিত মাটির ভিতরে গাছ লাগাতে পারেন তাহলে সে ক্ষেত্রে দেখা যাবে আপনাদের কাছে অনেক ভালো হবে। নিয়মিতভাবে আপনাদেরকে গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে তবে একটা বিষয় আপনারা সবসময় মনে রাখবেন , গাছের গোড়ায় সবসময় পানি দেওয়া দরকার হলে ও গাছের গোড়ায় যাতে ভুলে ও , যাতে পানি জমে না থাকে সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। সাধারণভাবে দেখা যায় শিকড় থেকে গজানো ডাল অথবা ‘শাখা’ এর সাহায্যে এই গাছটার বংশবৃদ্ধি হয়ে থাকে।

আর এই ঘৃতকুমারীর ভিতরে আছে ২০ ধরনের খনিজ পদার্থ। যেটা আমাদের মানব দেহের জন্য ২২টি অ্যামিনো অ্যাসিড দরকার সেগুলো এটার ভিতর বিদ্যমান আছে বলতে পারেন। আর তাছাড়াও এর ভিতরে ভিটামিন A, B1, B2, B6, B12, C এবং E রয়েছে।

ঘৃতকুমারী, হচ্ছে ১ টা রসালো উদ্ভিদ প্রজাতি। অনেকে হয়তো জানেন আবার অনেকেই জানেন না এটা হচ্ছে ১ টা পরিবারের উদ্ভিদ। ঘৃতকুমারী গাছটি আপনারা দেখতে পারবেন অনেকটা কাঁটাওয়ালা ফণীমনসা অথবা ক্যাকটাসের মতো। অ্যালোভেরা ক্যাকটাসের মত দেখা যায় তবুও এটা ক্যাক্টাস না এটা অবশ্যই মনে রাখবেন। লিলি প্রজাতির উদ্ভিদ। আর এই ঘৃতকুমারী আদি নিবাস হল আফ্রিকার মরুভূমি অঞ্চল এবং তার সাথে মাদাগাস্কার। অ্যালোভেরা আজকে থেকে প্রায় ৬০০০ বছর আগে মিশরে এই ঘৃতকুমারী এর উৎপত্তি লাভ করেছিল।

ঘৃতকুমারী গাছ

অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী পরিচিত ১টি দরকারি ভেষজ ঔষধি গাছ। অ্যালোভেরা গাছের গোড়া হতেই মূলত সবুজ রঙের পাতা হয়ে থাকে আর পাতাগুলো পুরু ধরনের হয়ে থাকে। যেটার দুই পাশেই করাতের মতো ছোট ছোট কাঁটার মতো থাকে। পাতার একদম ভিতরে থাকে স্বচ্ছ পিচ্ছিল ধরনের শাঁস থাকে আর সেটাকে অ্যালোভেরা জেল বলা হয়ে থাকে ।

১টা গাছ হতে আপনারা ৬০ থেকে ৭০ টার মত পাতা বিক্রি করতে পারবেন অনায়াসেই। তাছাড়াও আপনারা জানলে অবাক হয়ে যাবেন , ১টা গাছের পাতা হতে অনেকগুলো গাছ জন্মাতে পারে। তারপর আপনারা উপযুক্ত সময় এই গাছের পাতাগুলো কেটে সেগুলোকে বিক্রি করে দিতে পারবেন বেশ ভালো দামে। এই গাছ লাগানোর পরে সেরকম ভাবে কোনও যত্ন নেওয়ার দরকার হয়ে থাকে না। তবে এই গাছের উপরে যদি বেশি পরিমাণে তাপমাত্রা পড়ে তাহলে সেক্ষেত্রে দেখা যাবে গাছটি মরে যাবে, তাই কম তাপমাত্রার ভিতর রাখার চেষ্টা করবেন।

ঘৃতকুমারী খাওয়ার উপকারিতা

ঘৃতকুমারী খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি খাদ্য। আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য এবং তার সাথে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রতিরোধ করার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনারা যদি নিয়মিত ভাবে ঘৃতকুমারীর পাতার রস খেতে পারেন। তাহলে আপনার শরীর সবসময় ঠান্ডা থাকবে। ঘৃতকুমারী খেলে আমাদের শরীরে কার্যক্ষমতা অনেকগুণ বেড়ে যেতে থাকে।

আর যার ফলে বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে আমাদের শরীর অনেক ভালো থাকে কিংবা সুস্থ থাকে। এছাড়াও আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে ঘৃতকুমারী খাওয়ার সেগুলো এখন জেনে নেওয়া যাক।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে: ঘৃতকুমারীর রস যদি আমরা খাই তাহলে আমাদের শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য অনেক সাহায্য করবে। হজমক্রিয়া যদি ভালো না থাকে তাহলে পেটের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। ঘৃতকুমারী পরিপাক যন্ত্রকে পরিষ্কার করে দেয়। আর যার ফলে হজম শক্তি বাড়াতে অনেক কার্যকরী একটি খাবার বলা যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য এরপরে ডায়ারিয়া এই দুইটি ক্ষেত্রেই ঘৃতকুমারীর রস কার্যকরি ভূমিকা পালন করে থাকে। ঘৃতকুমারীর রস যদি আমরা খাই তাহলে আমাদের পেটের ভিতরে কোন কৃমি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। আর তার সাথে সাথে আমাদের পরিপাক ও রেচন যন্ত্রকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থেকে মুক্ত রাখার জন্য কাজ করে থাকে। আর তাই আপনারা যদি প্রত্যেক দিন অ্যালোভেরার রস পান করতে পারেন। তাহলে দেখতে পারবেন , আপনারা সুস্থ দেহের অধিকারি হতে পারবেন খুব সহজেই।

ভিটামিন আর খনিজ: অনেক রকমের ভিটামিন আর খনিজের এক সমৃদ্ধ উৎস হল অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী। ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন-এ,সি,ই,কোলিন, বি-১, বি-২, বি-৩ (নিয়াসিন) ও ভিটামিন বি-৬ এইগুলোর দারুন ১টি উৎস বলতে পারেন। ভিটামিন-বি-১২ রয়েছে এই উদ্ভিদে আর যেটা অনেক কম সংখ্যক উদ্ভিদের ভিতরে থাকে। ঘৃতকুমারী এর ভিতরে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম,ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক,সেলেনিয়াম, ক্রোমিয়াম, সোডিয়াম,আয়রন,পটাশিয়াম, কপার আর ম্যাংগানিজ। আর এর ভিতরে খনিজ উপাদানে একদম ভরপুর।

ত্বক ও চুলের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে: আর সব থেকে বড় কথা হল , এই অ্যালোভেরা কিংবা ঘৃতকুমারী আধুনিক প্রসাধনী সামগ্রীর অন্যতম ১টি কাঁচামাল। এটা আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য অনেক উপকারী একটি ঔষধ হিসেবে কাজ করে থাকে। তারপর এটা আমাদের ত্বকের অনেক ক্ষতি সারিয়ে তোলার জন্য সাহায্য করে। আমাদের শরীরে যদি কোন খানে থাকে, তাহলে সেটা সারিয়ে তোলার জন্য অনেক কার্যকরী ভাবে কাজ করে থাকে। রোদে পোড়া, ত্বকে ফুসকুড়ি পড়ে যাওয়া এরপরে পোকার কামড়ের সকল ধরনের সমস্যা আমাদের শরীরে হয়ে থাকে সেগুলো সারিয়ে তুলতে পারে এই ঘৃতকুমারী।

বেদনানাশক হিসেবেই ঘৃতকুমারী কাজ করে। চুল পরিষ্কার করার জন্য,এরপরে চুলে পুষ্টি জোগাতে জন্য ঝলমলে উজ্জ্বল করতে ও ঘৃতকুমারীর রসের তুলনা অন্য কিছুর সাথে দিলে সেটা হবে না এটা অন্যান্য সকল কিছু থেকে,এছাড়া ও আর ও অনেক উপকারিতা রয়েছে সেগুলো আপনারা নিচে আরো জানতে পারবেন।

ওজন কমিয়ে দেওয়ার জন্য সাহায্য করে: আপনারা কি অনেকদিন ধরে ওজন কমানোর জন্য ডাক্তার দেখাচ্ছেন বা ব্যায়াম করে যাচ্ছেন। কোনো রকমের সুফল পাচ্ছেন না? তাহলে আর কোন চিন্তার কারন নেই। আপনারা এই ঘৃতকুমারী যদি নিয়মিত ভাবে খান তাহলে আপনাদের শরীরের ওজন কমে যাবে। আপনারা যদি এটাকে নিয়মিতভাবে খেতে থাকেন তাহলে আপনাদের শরীরের অতিরিক্ত সকল কোলেস্টেরল রয়েছে সেটা কমানোর জন্য অনেক সাহায্য করবে। আর যার কারণে আপনাদের শরীরের ওজন অনেক তাড়াতাড়ি কমে যাবে।

চাপ আর রোগ প্রতিরোধ করার জন্য কাজ করে: ঘৃতকুমারী এর ভিতরে দারুণ অ্যাডাপ্টোজেন আছে। আর যেটা আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে থাকে এবং বাহ্যিক নানা চাপ আর রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালনকারী উপাদানকে অ্যাডাপ্টোজেন বলা হয়ে থাকে। ঘৃতকুমারী আমাদের শরীরের ভেতর অভ্যন্তরীণ পদ্ধতির সাথে মিশে গিয়ে একেবারে প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আগের থেকে আরও বেশি পরিমাণে সক্রিয় করে তোলার জন্য সাহায্য করে থাকে।

অনিয়মিতভাবে / অস্বাভাবিক রকমভাবে (মাসিক) হলে প্রতিরোধ করে থাকে: ঘৃতকুমারী পাতার শাষকে আপনারা যদি একটু ভালোভাবে করে চটকে চালুনিতে/ঝাকিতে পাতলা আবরণ করে নিবেন। তারপর সেটাকে শুকিয়ে নেওয়ার পরে যদি আরেকবার তার উপরে পাতলা আবরণ লাগিয়ে নেন।

আর এইভাবে যদি আপনারা কয়েকবার লাগানোর পরেই আম সত্বের মত তৈরী করে নিতে পারেন। তাহলে আপনারা সেই ক্ষেত্রে আপনাদের যখন মাসিক হবে সেই সময়ে ২/৩ গ্রাম পরিমাণ পানিতে ভিজিয়ে নেবেন এবং প্রত্যেক দিন সকালে খালি পেটে খাবেন তাহলে আপনারা অনেক উপকার পাবেন ।

পেটের ইস্তিজ্ঞা (মল) পরিষ্কার করার জন্য সাহায্য করে:
যখন সময় হবে তখন আপনারা সকাল বেলা খালি পেটে আপনারা টাটকা ঘৃতকুমারী পাতার শাঁস রয়েছে। সেটাকে ১০/১৫ গ্রামের মতো ঠাণ্ডা পানির সাথে মিলিয়ে হালকা চিনি মিশিয়ে শরবত বানিয়ে যদি খান। তাহলে দেখা যাবে ,আপনাদের সম্পন্ন ইস্তিজ্ঞা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

অর্শ রোগের থেকে মুক্তি দেয়: অর্শ রোগের বা পাইলস এর স্বভাবধর্ম কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে যাওয়া। আর সেটা থাকুক বা নাই থাকুক সেটা কোন বিষয় না, এই ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর শাঁস ৫/৭ গ্রাম মাত্রায় একটু অল্প পরিমাণে যদি ঘি দিয়ে মিশিয়ে নিয়ে সকালে এবং বিকেলে আপনাদেরকে দুই বার খাওয়া লাগবে। তাহলে দাস্ত পরিষ্কার হবে আর আপনাদের অর্শের ও অনেক উপকার হবে।

শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে: আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় এমন কিছু খাবার থাকে যেগুলো আমাদের শরীরের শক্তি কমিয়ে দেয়।আপনারা যদি নিয়মিত ভাবে ঘৃতকুমারীর রস খেতে পারেন। তাহলে আপনাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার শরীরের ওজন ঠিক রাখার জন্য অনেক কাজ করবে এই ঘৃতকুমারী।

ঘৃতকুমারী গাছের গুনাগুন

ঘৃতকুমারী গাছের উপকারিতা কথা বললে এর কোনো বিকল্প নেই। গাছের মতো ঔষধ বর্তমান সময়ে এখন আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে অনেক বেশি পরিমাণে। আদিম যুগে মানুষ এটা শুধুমাত্র গাছ গাছড়ার ধারায় তাদের শরীরের সমস্ত রোগ গুলো হয়ে থাকত সেগুলো ভালো করতো এটা আমরা অনেকেই জানি সে সময় কোন ডাক্তার কবিরাজ বা বৌদ্ধ ছিল না।

বর্তমানে এখন হোমিওপ্যাথি অ্যালোপ্যাথি এর সাথে আয়ুর্বেদিক হিসাবে গাছের কোন বিকল্প নেই বলা চলে। আমাদের পৃথিবীতে বর্তমানে এখন অনেক রকমের গাছ রয়েছে আর যেগুলো আমাদের শরীরে ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে। আর তাছাড়া আমরা সকল সবজি খেয়ে থাকি সেগুলো বলতে গেলে এক রকমের ঔষধ। সেগুলো থেকে আমরা বিভিন্ন রকমের ভিটামিন পেয়ে থাকি।

যেমন মনে করুন, শর্করা,প্রোটিন এছাড়াও আরও অনেক ভিটামিন আমরা সবজি থেকে পেয়ে থাকি। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। আর বর্তমানে এখন এই চিকিৎসা নেই বললেই চলে। কেউ এই চিকিৎসা করাতে চায় না, আজ আমি আপনাদের সাথে এমন একটা গাছের সম্পর্কে আলোচনা করবো। যেগুলো আপনাদের জীবনে অনেক সহযোগিতা করবে বা আপনাদের জীবনে অনেক দরকার। আর তার সাথে সেই গাছের উপকারিতা এবং গুনাগুন সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করব।

গুণবতী ভেষজ ঘৃতকুমারী (ঘৃতকুমারী) মিসরীয় অনেক মানুষদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে সৌন্দর্যবর্ধনকারী প্রকৃতিকন্যার লাতিন নাম হল এই অ্যালোভেরা অথবা ঘৃতকুমারী। বাংলা নাম হচ্ছে‘তরুণী ঔষধি গাছ’। ভেষজ হিসাবে এই গাছের কদর আছে এই গাছের তবে আমাদের দেশে বর্তমানে এখন এটি মূলত ঘৃতকুমারী নামেই সবার মাঝে বেশি পরিচিত। অনেকে আবার রয়েছে যারা এটাকে শুধুমাত্র ‘কুমারী’ নামে ও ডেকে থাকেন।

‘অ্যালো’ পরিবারের ১টি উদ্ভিদ ঘৃতকুমারী। মানবদেহের জন্য ২২টি অ্যামিনো অ্যাসিড দরকার হয়ে থাকে সেটার ৮টিই আছে এই ঘৃতকুমারী এর ভিতরে। আর তাছাড়াও এর ভিতরে আছে ২০ রকমের খনিজ পদার্থ। তাছাড়াও ঘৃতকুমারীর ভিতরে একই সঙ্গে রয়েছে ভিটামিন A, B1, B2, B6, B12, C এবং E আছে। আর সারা বিশ্বজুড়ে এই গাছের জুস ক্যাপসুল কিংবা জেলের আকারে বিক্রি করা হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে এটা আমরা অনেকেই জানি।

ব্যবহার: ঘৃতকুমারী গাছের পাতা আর তার সাথে শাঁস দুইই ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

গুনাগুন: ঘৃতকুমারী পাতার রস যদি আমাদের ত্বকের উপর লাগাই তাহলে সেক্ষেত্রে দেখা যাবে আমাদের ত্বকের উজ্জলতা অনেক বেড়ে যাবে। আর আগের থেকে এবং রোদে পোড়া ত্বক রয়েছে সেটার ও অনেক উপকার হবে। সেটা আগে যেরকম ছিল তার থেকে অনেক ভালো হয়ে যাবে। আপনারা যদি নিয়মিত ভাবে ঘৃতকুমারীর রস খেতে পারেন তাহলে পরিপাক প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যাবে। আর যার কারণে আপনাদের শরীরের পরিপাকতন্ত্র সতেজ থাকবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে অনেক সহজে। তাছাড়া ডায়েরিয়া সারাতে ও ঘৃতকুমারীর দারুন ভাবে কাজ করে থাকে। নিয়মিত ভাবে ঘৃতকুমারীর রস সেবন করলে আপনাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং আপনাদের ওজন বৃদ্ধি পাবে।

ঘৃতকুমারী খাওয়ার নিয়ম

অ্যালোভেরার জেল সাধারণ ভাবে আপনারা শরবত বানিয়ে তার পরে খেতে পারবেন খুব সহজেই। আপনারা আপনাদের বাড়িতে অ্যালোভেরা গাছ লাগাতে পারেন। আর আপনারা যদি গাছ লাগাতে না পারেন আপনাদের বাড়িতে তাহলে সেক্ষেত্রে আপনারা বাজার থেকে এলোভেরা জুস কিনে আনতে পারেন, জুস কিনে এনে খেলে ও হবে। প্রত্যেক দিন আপনারা ২ টেবিল চামচ জেল খেলেই সেটা আপনাদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে হবে।

অ্যালোভেরা জুস খাওয়ার উপকারিতা

  1. ভিটামিনের অভাব দূর করে দেয়।
  2. হজম শক্তির উন্নতি করে।
  3. এন্টিঅক্সিডেন্ট এর যদি অভাব থাকে তাহলে সেটা দূর করে দিতে পারে।
  4. বদহজমের যদি সমস্যা থাকে তাহলে সেটা ভালো হয়ে যাবে।
  5. রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে আগের থেকে।
  6. রক্তশূন্যতা থাকলে সেই সমস্যা ভালো করবে।

ঘৃতকুমারী বৈজ্ঞানিক নাম

অনেকেই আছে যারা জানতে চান, ঘৃতকুমারী এর বৈজ্ঞানিক নাম কি? ঘৃতকুমারী এর বৈজ্ঞানিক নাম হল Aloe vera (ঘৃতকুমারী) এর বৈজ্ঞানিক নাম Aloe vera এটি আসলে Asphodelaceae (Aloe family) পরিবারের ১ উদ্ভিদ বলা যায়।

ঘৃতকুমারী কোথায় পাওয়া যায়?

আপনারা ইচ্ছে করলে আপনাদের বাড়ীর ছাদে কিংবা আপনাদের বাড়ির আশেপাশে জমি থাকলে সেখানে লাগাতে পারেন। সেখান থেকে আপনারা ঘৃতকুমারী পাবেন কিংবা আপনারা যদি গাছ লাগাতে না পারেন। তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনারা বাজার থেকে কিনে আনতে পারেন খুব সহজে।

ঘৃতকুমারী উপকারিতা

ঘৃতকুমারী খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে আর এই বিষয়টা আমি এর আগেও বলেছি। আশা করি সেই বিষয়গুলো আপনারা দেখলে বুঝতে পারবেন , ঘৃতকুমারী খাওয়ার উপকারিতা কি কি রয়েছে এবংআপনারা কেন ঘৃতকুমারী খাবেন।

ঘৃতকুমারী গাছের উপকারিতা

ঘৃতকুমারী গাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে আর এই বিষয়টা সম্পর্কে উপরে বিস্তারিতভাবে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। উপরে আমি সেগুলো বিস্তারিতভাবে লিখে দিয়েছি। আর তাছাড়া ও যদি কোন কিছু জানার থাকে।তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের মনে সকল প্রশ্ন রয়েছে সেগুলো সব উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এরপরে ও যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আপনারা আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমরা সেটার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
আরও পড়ুনঃ একটি চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা

আমাদের শেষ কথা
তাহলে আজকে আমাদের প্রতিবেদনের ভিতরে ঘৃতকুমারী সম্পর্কে যত তথ্য রয়েছে সেগুলো দেওয়ার চেষ্টা করলাম। আমাদের প্রতিবেদন ভালো লেগেছে আশা করি, আর এইরকম বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের তিস্তা মিডিয়ার সাথেই থাকুন।

Categories
ভেষজ গাছ

অড়হর গাছের অপকারিতা

প্রকৃতির এই বিচিত্র মেলায় চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য ভেষজ উদ্ভিদ। এর মধ্যে রয়েছে অড়হর। এটির যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনী রয়েছে অড়হর গাছের অপকারিতা। যাদের একেকটি একেক গুণে ভরপুর। সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর প্রত্যেকটা জিনিসের পিছনে প্রকৃতির জন্য মঙ্গল রেখেছেন অন্য দিকে অড়হর গাছের অপকারিতা রয়েছে। তেমনি আজ আমরা প্রকৃতির এক বিস্ময়কর ভেষজ উদ্ভিদ এর নানা দিক নিয়ে আলোচনা করবো। যার নাম হল অড়হর।

  • পোস্টি পড়ার পর আপনি জানতে পারবেন
  • অড়হর গাছের উপকারিত সম্পর্কে।
  • অড়হর গাছের অপকারিতা সম্পর্কে।
  • অড়হর গাছের গুনাগুণ সম্পর্কে।
  • অড়হর গাছের ঔষুধি গুনাগুণ সম্পর্কে।
  • অড়হর গাছের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।
  • অড়হর গাছের চাষাবাদ সম্পর্কে।
  • অড়হর গাছ কোথায় পাওয়া যায়।
  • অড়হর গাছের বহিঃসংযোগ সম্পর্কে।

অড়হর গাছের অপকারিতা

যেকোনো বিষয়ের ভালো দিকগুলো জানার সাথে সাথে। একসাথে জানা উচিত তার মন্দ দিকগুলো। তাই শুরুতেই অড়হর অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।

অড়হর একটি প্রাকৃতিক ভেষজ উদ্ভিদ হওয়ায় এর থেকে ক্ষতির আশঙ্কা না থাকাটাই স্বাভাবিক।
কারণ প্রকৃতি শুধুমাত্র মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত। এটি কোন বিজ্ঞানী ঔষধি গাছ না। তাই এর ক্ষতির দিকটা না দেখায় ভালো।

অড়হর গাছ

অড়হর একটি ঔষধি গাছ যার ইংরেজি নাম হলঃ- pigeon pea এবং বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছেঃ- Cajanus cajan এটি এক প্রকারের ডাল বীজ। যা হার্ব জাতীয় বর্ষজীবি গাছের অধিভুক্ত। এ গাছ গুলোর পাতা কিছুটা লম্বা ও মথা চোখ আকৃতির হয়। অড়হর গাছের ফুল হলদে এবং বীজ ছোট ছোট গোলাকার আকৃতির।

গাছটি সাধারণত দু থেকে আড়াই মিটার লম্বা হতে পারে। অড়হর গাছটি শক্ত হলেও পাতা কান্ড খুবই নরম হয়। অড়হর গাছের পাতা ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার লম্বা ও ১ থেকে ১/২ সেন্টিমিটার চওড়া হয়।

আমি নিজস্ব গবেষণায় এটি সম্পর্কে বা এটির অপকারিতে সম্পর্কে তেমন কোন পোস্ট বা রেফারেন্স না পাওয়ায়। এটির উপকারিতাকেই ফোকাস করে নিন্মে আলোচণা তুলে ধরলাম।

অড়হর গাছের উপকারিতা

অড়হর গাছ মানব স্বাস্থ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ উদ্ভিদ। আদিকাল থেকে অড়হর গাছের পাতা ও বিচি নানা রোগের সমস্যায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে যেমনঃ-

অরুচিতে অড়হর

আমরা যারা পুষ্টিহীনতায় ভুগছে তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে খাদ্যে অরুচি। তাই শরীরের পর্যাপ্ত পুষ্টির যোগান দানে। খাবের রুচি বাড়ানো অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যাদের খাদ্য অরুচি সমস্যা আছে তারা নিয়মিত ভাবে অড়হর গাছের রস সেবনে। বেশ ভালো একটা উপকার পেতে পারেন।

এক বা দেড় কাপ অড়হর গাছের ডালের জুসের সাথে সামান্য আদার রস, মরিচ ও লবন মিশিয়ে মিশ্রণটি সেবন করতে পারেন। নিয়মিতভাবে অড়হর রস সেবনে আপনার মুখে হারিয়ে যাওয়া রুচি আবার পিরে আসবে।

জন্ডিস নিরাময়ে অড়হর

জন্ডিস একটি মারাত্মক ব্যাধি। এটি সহজে সেরে উঠতে চায় না। অনেক সময় দীর্ঘদিনের চিকিৎসার পরও কোনো ফল পাওয়া যায় না। তাই যাদের জন্ডিসের মতো সমস্যা আছে তারা চাইলে। জন্ডিস নিরাময় অড়হর গাছের পাতার রস সেবন করতে পারেন। এতে অনেক বেশি সুফল পাওয়া যাবে।

ব্যবহার বিধি

প্রথমে কয়েকটা অড়হর পাতা নিয়ে নিন। তারপর সেগুলোকে পরিষ্কার বা বিশুদ্ধ জলে ধুয়ে নিন। এবার পাতা গুলোকে ব্লান্ডের বা শিল পাটায় বেটে থেঁতো করে নিন। তারপর একটা ছাঁকনির সাহায্যে রসগুলো আলাদা করে নিন।
এবার সংগ্রহীত রসে সামান্য লবন নিয়ে রসের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর মিশ্রনটিকে একটি পরিষ্কার পাত্রে কিছুটা সময় গরম করে নিন।তারপর প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে অড়হর গাছের এ রসটি সেবন করুন। জন্ডিস নিরাময় গাছের পাতার রস অনেক বেশি উপকার সাধন করে।

অশ্বরোগে অড়হর

যারা অশ্বরোগে ভুগছেন তারা প্রিতিদিন নিয়ম করে। সকালে ও বিকালে এক বা দু চামচ অড়হর পাতার রস একটু গরম করে সেবন করতে পারেন। এতে অশ্বরোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

কাশিতে অড়হর

যারা কাশিতে অক্রান্ত তারা প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ চা চামচ অড়হর পাতার রসের সঙ্গে মুধু মিশিয়ে মিশ্রণটি সেবন করতে পারেন।

ফোলাতে-

যাদের বিষ ব্যথার কারণে বা শরীরের কোন স্থানে আঘাত লাগার কারণে স্থানটি ফোলে গেছে। তারা চাইলে আক্রান্ত স্থানে অড়হর ডালের পুলটিস দিতে পারেন। এতে ফোলা কমে যাবে।

জিহবার ক্ষত

যাদের মুখে গাঁ, মাড়ি ক্ষত বা জিহবায় ক্ষত আছে তারা প্রতিদিন দু থেকে তিনটি অড়হর গাছের কচি পাতা চিবিয়ে খেলে মুখের ক্ষত সেরে যাবে।

ডায়াবেটিস

যারা ডায়াবেটিস সমস্যা বা ব্লাড সুগার সমস্যায় ভুগছেন। তারা প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে। অড়রহ পাতার রস একটু গরম করে সেবন করতে পারেন। এছাড়াও ১০ গ্রাম অড়হর গাছের মূলকে ছেঁছে দুই কাপ পানিতে ভালো করে সেদ্ধ করে খেতে পারেন। এতে অনেক বেশি উপকার পাবেন।

সাপের দংশনে ও ফোলা

স্থানে অড়হর বিচি বাটা প্রলেপ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সাপে কাটা রুগীর ক্ষেত্রে খুব দ্রুত ডাক্তারের কাছে চলে যাওয়াই ভালো। কেননা ভেষজ উদ্ভিদ আস্তে আস্তে কাজ করে। তাই প্রথমিক চিকিৎসা হিসেবে অড়হর ব্যবহার করলেও সম্পূর্ণ চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরী।

হাত পা জ্বালা-পোড়া

যাদের হাত পা জ্বালাপোড়া করে। তারা অড়হর রাসকে হাত পায়ে মেখে ঘন্টা খানেক রেখে দিলে অনেকটা আরাম পাবেন।

পুষ্টি গুনাগুণ

অড়হর একজাতীয় ভেষজ ঔষধি গাছ। এ গাছের প্রতি ১০০ গ্রামে ৩.৫ আউন্স পুষ্টি বিদ্যমান। এছাড়াও ১,৪৩৫ কিজু শক্তি, ৬২.৭৮ g শর্করা, ১৫ g খাদ্য আঁশ, ১.৪৯ g স্নেহ পদার্থ রয়েছে। তবে এ গাছে ০ গ্রাম চিনি যুক্ত থাকায়। ডায়াবেটিস চিকিৎসায় গাছটি অনেক বেশি ফলদায়ক।

তাছাড়াও অড়হর গাছে প্রোটিন, ট্রিপ্টোফ্যান, ভিটামিন, খনিজ, জিংক, পটাসিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়াম সহ অসংখ্য পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি গাছ।

চাষ পদ্ধতি

সারা বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ৪৪.৯ লক্ষ টন অড়হর ডাল উৎপন্ন হয়। গাছটির অর্ধ শতাংশ অর্থাৎ ৬৩% শাতাংশ উৎপন্ন হয় ভারতে। এছাড়াও বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে অড়হর চাষ করা হয়। যেমন:- যশোর, রংপুর, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া সহ বেশ কিছু অঞ্চলের এটির চাষ লক্ষ করা যায়।

বাংলাদেশে বর্ষার শুরুতে এপ্রিল বা মে মাসে এটির বীজ লাগানো হয়। যা ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে পেকে যায়।
আরোও পড়ুনঃ বাসক পাতার উপকারিতা
জানলে অবাক হবেন পাথরকুচি পাতা খাওয়ার উপকারিতা

বহিঃসংযোগ

গাছটি সম্পর্কে বা গাছটি নিয়ে বেশ কয়েকটি সাইটে বহিঃসংযোগ পাওয়া যায়। যেমনঃ- ভারতের রাজস্থান, ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মহিলা কৃষকদের জন্য কবুতর শস্য
“কাজানাস কাজন”। Germaplasm রিসোর্স ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (GRN)। কৃষি গবেষণা (এএস), মার্কিন কৃষি ডিপ।

“কৃষি গবেষণা পরিসেবা। জার্মপ্লাজম Resource ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ। যা সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-১৯।

শেষ কথা
এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ উদ্ভিদ ও তাদের গুণাবলী সহ, ভিবিন্ন রোগের গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে চোখ রাখুন আমাদের সাইটে। এবং আজকের পোস্টের আলোচ্য বিষয় অড়হর গাছ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কোন তথ্য জানা থাকলে অব্যশই এ পোস্টের কমেন্ট এ তা লিখে যাবেন। ধন্যবাদ।