আমাদের প্রকৃতির মধ্যে রয়েছে অসংখ্য ঔষধি গাছ, যেগুলো শুধু পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা পালন করে না, সাথে বিভিন্ন ভাবে আমাদের উপকার করে। আজকে এই বাসক পাতার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হবো। আদিকালে মানুষ যেকোন রোগ নিরাময়ে ভেষজ চিকিৎসা সেবাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকতেন, কালের বিবর্তনে এর চাহিদা মানুষের কাছে কিছুটা কমে গেলেও হারিয়ে যায় নি সেসব ঔষধি গাছের গুন।
আমাদের সকলেই যেসব উপকারী গাছের কথা জানি সেগুলো হল বাসক, নিম, তুলসী, অর্জুন ইত্যাদি। তবে আজকে যে গাছটি নিয়ে বলতে যাচ্ছি তা হলো ” বাসক গাছ” যাকে কোনভাবেই বাদ দেয়া যায় না।আদিযুগ থেকে বাসক গাছ বহু গুণে গুণান্বিত। এটি মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের একটি অন্যতম ভেষজ উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম “Justicia Adhatoda” এবং ব্যাবসায়িক নাম বাসক। কান্ড, পাতা , গাছের ছাল , ফুল সবকিছু মূল্যবান ভেষজ চিকিৎসা সেবা প্রদানে ভূমিকা পালন করে। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যবাসে যদি এক অথবা দুইটি বাসক পাতা খাওয়া যায় তবে শরীরে এটি বিভিন্ন রোগের উপশম হিসাবে কাজ করবে। এছাড়া ঔষধ হিসাবে এর বহূবিধ ব্যাবহার রয়েছে।
বাসক পাতার উপকারিতা
বাসক গাছের পাতাটির বহুবিধ ব্যবহার এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। বাসক পাতার মধ্যে ভ্যাসিনিন নামক এক ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা অনেক রোগের ঔষুধে ব্যাবহার করা হয়। এছাড়াও নানা ধরনের এসেনসিয়াল অয়েল রয়েছে। বাসক পাতার উপকারিতার কথা বলতে গেলে যেসব রোগের প্রতিষেধক হিসেবে এইগুলো
ব্যাবহার করা সেগুলো হল: বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। ঋতুর পরিবর্তনের ফলে আমাদের দেশে প্রায় সবারই ঠান্ডা, কাশি, জ্বর লেগেই থাকে। এহ্মেত্রে যদি বাসক পাতার বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে । পুরানো সর্দি কাশি কমাতে বাসক পাতার রস সেবনে উপকার পাওয়া যায়। যেহুতু বাসক পাতার রস তিতা এই কারনে সাথে মধু মিশিয়ে খেলেও চলবে। মধু বরাবরই ঠান্ডার জন্য উপকারী। তবে এই হ্মেত্রে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে উপকার পাওয়া যায় এবং খাওয়ার পর অন্তত এক গ্লাস পানি পান করতে হবে। তাছাড়া জ্বর হলে তাপমাত্রা কমাতে বাসক পাতা সাহায্য করে। শিশুদের পেটে কৃমি হলে বাসকের ছালের রস খাওয়ানো হলে বাসকের তিক্ততার কারণে কৃমি দূর হয়ে যায় । শ্বাসকষ্ট সমস্যা দূর করতেও বাসক পাতার ভূমিকা রয়েছে। এহ্মেত্রে বাসক পাতা শুকিয়ে ঐ পাতা চরুটের মতো পাকিয়ে ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে সাহায্য করে।
যাদের খিচূনি রোগ রয়েছে তারা যদি বাসক পাতার রস নিয়মিত সেবন করে তাহলে খিচূনি রোগ দূর হয়ে যায়। আজকাল অনেকেরই ইউরিন ইনফেকশন (প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া) সমস্যা হয়ে থাকে, এহ্মেত্রে মেডিকেল চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যায়বহুল। কিন্তু মেডিকেল চিকিৎসা সেবার বিকল্প হিসেবে বাসকের ফুল বেটে ২/৩ চামচ ও ১/২ চামচ সরবত করে খেলে এই রোগের উপকার পাওয়া যায়। অনেকেরই দাদ বা চুলকানি সমস্যা থাকে। এই সমস্যা দূর করতে বাসকের কচি পাতার সাথে যদি কাঁচা হলুদ বেটে দাদ বা চুলকানিতে লাগালে চুলকানি সেরে যায়। জন্ডিস নিরাময়ে বাসক পাতার ভূমিকা রয়েছে।
বাসক পাতার বা ফুলের রস ১/২ চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে জন্ডিস নিরাময়ে সাহায্য করে। অনেকেরই ভিটামিন এর অভাবে দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত বের হয়। দাঁতের এই সমস্যা দূর করতে যদি কেউ বাসক পাতা ছেঁচে পানিতে ফুটিয়ে কুসুম গরম থাকা অবস্থায় কুলকুচি করে তাহলে ফল পাওয়া যায়। গলাব্যাথা বা কাশির সমস্যা থাকলে বাসক পাতার রসে উপকার পাওয়া যায়। সৌন্দর্য বর্ধনে বাসক পাতার ব্যাবহার হয়ে থাকে। বাসকের রসের সাথে শংঙ্খচূর্ণ মিশিয়ে মুখে লাগালে রং ফর্সা হয়। অনেকেরই শরীরের মধ্যে দুগন্ধ থাকে এই সমস্যা দূর করতে বাসক পাতার কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে দুর্গন্ধ দূর হয়।
আমাদের শরীরের মধ্যে রক্ত পরিস্কার না থাকলে মুখে ব্রন, পেটে সমস্যা, এলার্জি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। বাসক পাতার রস নিয়মিত সেবন করলে রক্ত পরিস্কার হয়, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বেড়ে যায়, রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। শরীরের মধ্যে ব্যাথা বা কাজ করতে গিয়ে শরীরের কোন অংশে মাংস পেশীর মধ্যে টান লাগলে সেহ্মেত্রে চুন হলুদ করে এর সাথে বাসক পাতা বেটে মালিশ করলে আরাম পাওয়া যায়।
আমাদের দেশে অনেক মেয়েদেরই অনিয়মিত মাসিক সমস্যা থাকে অথবা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, তলপেটে ব্যথা করে। এইজন্য বাসক পাতা খেলে উপকার পাওয়া যায়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের বাসক পাতার অবদান রয়েছে। গ্ৰামীন দরিদ্র নারীরা প্রতিদিন শত শত বাসক পাতা সংগ্রহ করে শুকানোর পরে ৩০/৪০ কেজি দরে বিক্রি করতে পারে। বাংলাদেশ বর্তমানে বিভিন্ন উপজেলায় বেশ কিছু গ্ৰামে যেমন: রংপুরের পীরগঞ্জের পানোয়া গ্ৰাম, জাহাঙ্গীরাবাদ, পাইতান, এনায়েতপুর, শাহপুর, কেশবপুর, শাহেদুপুর, নাসীরাবাদসহ অত্যন্ত পনেরোটি গ্ৰামে বাসক চাষ হয়।
বাসক পাতা খাওয়ার নিয়ম: যে গাছের গুন নিয়ে এতো কথা হয়েছে আসুন জেনে নেয়া যাক ঔষধ হিসেবে এই গাছের উপাদানসূমহ আমরা কি ভাবে খেতে পারি। বাসক পাতা গুনের কথা শুনতে যতটা মিষ্টি বা ভালো লাগবে খাবারের বেলায় তার উল্টো।বাসক পাতা প্রচন্ড তেতো হয়ে থাকে। নানাভাবে বাসক পাতা খাওয়া গেলেও বেশিরভাগ হ্মেত্রে ঔষধ হিসেবে বাসক পাতার রস খাওয়ানো হয়ে থাকে। অপরদিকে বাসক পাতা গরম জলে ফুটিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যায়। পাতার রস খাওয়ার হ্মেত্রে পাতা ভালো করে ধুয়ে বেটে নিতে হবে, প্রতি এক চামচ পাতার রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলেও সেহ্মেত্রে উপকার পাওয়া যায়। যদি কেউ বাসক পাতার জল খেতে চায় ঐহ্মেত্রে পাতা ভালো করে ধুয়ে পানিতে ফুটিয়ে, পানি ঠাণ্ডা করে ছেঁকে খাওয়া উচিত।
বাসক গাছের চাষ পদ্ধতি
বাসক গাছটি বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে যেমন ভারত, শ্রীলঙ্কা, কলোম্বিয়া, মালোশিয়াতে এই গাছটি পাওয়া যায়। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বাসক পাতার চাষ করে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সাবলম্বী হয়ে উঠেছে। বাসক পাতা চাষে আলাদা যত্নের প্রয়োজন হয় না।সমতল ভূমিতে যেখানে লোকালয়ের উপস্থিতিতে এই গাছ জন্মে থাকে। যার ফলে গ্ৰামীন দরিদ্র মানুষজন বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার পাশে এই পাতা চাষ করে অর্থ উপার্জন করতে সহ্মম হচ্ছে। বাসক গাছটি চাষের হ্মেত্রে ১/২ টি কাটিং গর্তে রোপন করতে হবে।
গর্তে পযাপ্ত পরিমাণ গোবর সার দিতে হবে। প্রথম ছয় মাস থেকে পাতা সংগ্রহ করা যাবে। সংগ্ৰহ করার পরে ২/৩ ঘন্টা ছায়ায় রেখে পাতা শুকিয়ে নিতে হয়। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক গাছ থেকে তিন মাস পর পর পাতা সংগ্রহ করা যায়।গ্ৰামীন দরিদ্র নারীরা প্রতিদিন শত শত বাসক পাতা সংগ্রহ করে শুকানোর পরে ৩০/৪০ কেজি দরে বিক্রি করতে পারে। বাংলাদেশ বর্তমানে বিভিন্ন উপজেলায় বেশ কিছু গ্ৰামে যেমন: রংপুরের পীরগঞ্জের পানোয়া গ্ৰাম, জাহাঙ্গীরাবাদ, পাইতান, এনায়েতপুর, শাহপুর, কেশবপুর, শাহেদুপুর, নাসীরাবাদসহ অত্যন্ত পনেরোটি গ্ৰামে বাসক চাষ হয়।
কেন বাসক পাতা ব্যাবহার করব: বাসক পাতার এতো উপকার কথা শুনে আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন পরবর্তীতে উপরিউক্ত কোন একটি সমস্যা হলে বাসক পাতার ব্যাবহার করবেন। বাসকের পাতা যেকোন রোগ নিরাময়ে ব্যাবহার করলে শরীরে তৎহ্মণাত কাজ করতে সাহায্য করে।বাসক পাতার মধ্যে হ্মারের পরিমাণ বেশি হওয়ার ফলে কোন পোকা মাকড় ধরে না, এমনকি ছত্রাক ও জন্মায় না যার কারণে সংরক্ষণ করা যায় এবং প্রয়োজনে ঔষুধ হিসাবে ব্যবহার করা যায়।
আরোও পড়ুনঃ জানলে অবাক হবেন পাথরকুচি পাতা খাওয়ার উপকারিতা
পরি সমাপ্তি: প্রত্যেক জিনিস এর যেমন উপকারী দিক আছে তেমনি আছে কিছু অপকারি দিকও। ব্যাবহারকারীকে ব্যাবহারের বেলায় অপকারিতা জেনে ব্যাবহার করতে হবে। যেমন: প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেলে পেট খারাপ সহ বমি ভাব হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বাসক পাতার উপকারিতা যেমন রয়েছে। তেমনি রয়েছে বাসক পাতার মধ্যে এমন কিছু হ্মারীয় পদার্থ রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। বাসক পাতা বেশি খেলে শরীরে শর্করার পরিমাণ কমে যায় তা ডায়েবেটিক হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করে। এইজন্য বাসক পাতা সেবনে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কেননা আমাদের অসতর্কতা আমাদের অস্বােস্থ্যর কারণ হতে পারে।
16 replies on “বাসক পাতার উপকারিতা”
Everything is very open with a precise clarification of the issues. It was really informative. Your website is extremely helpful. Thanks for sharing!
ওয়াও! এটি একটি আর্থিক স্বাধীনতা জন্য একটি দ্রুততম উপায়. http://go.suqomuaq.com/0j35
রোবট এক ক্লিক আপনি হাজার হাজার ডলার আনতে পারেন. http://go.suqomuaq.com/0j35
# 1 নেট আর্থিক বিশেষজ্ঞ! নতুন রোবট দেখুন http://go.suqomuaq.com/0j35
অর্থ প্রয়োজন সবাই এই রোবট চেষ্টা করা উচিত. http://go.suqomuaq.com/0j35
আর্থিক রোবট আপনার # 1 অর্থ উপার্জন বিশেষজ্ঞ. http://go.suqomuaq.com/0j35
অবসরপ্রাপ্তদের জন্য সেরা অনলাইন কাজ আপনার পুরানো বয়সের সমৃদ্ধ করুন. http://go.suqomuaq.com/0j35
টাকা দরকার? আর্থিক রোবট আপনার সমাধান. http://go.suqomuaq.com/0j35
এই বট ব্যবহার করে ইন্টারনেট অর্থ উপার্জন করুন. এটা সত্যিই কাজ করে! http://go.suqomuaq.com/0j35
আর্থিক রোবট ধনী মানুষের সেরা সহচর. http://go.suqomuaq.com/0j35
ওয়াও! এটি একটি আর্থিক স্বাধীনতা জন্য একটি দ্রুততম উপায়. http://go.suqomuaq.com/0j35
ইন্টারনেটে সেরা আর্থিক রোবট চেষ্টা করে দেখুন. http://go.suqomuaq.com/0j35
চালু $1 মধ্যে $ 100 অবিলম্বে. আর্থিক রোবট ব্যবহার করুন http://go.suqomuaq.com/0j35
সব দিন লম্বা আদায় রাখা স্বয়ংক্রিয় রোবট চেষ্টা করে দেখুন. http://go.suqomuaq.com/0j35
# 1 নেট আর্থিক বিশেষজ্ঞ! নতুন রোবট দেখুন http://go.suqomuaq.com/0j35
টাকা দরকার? সহজেই এখানে পাবেন? http://go.suqomuaq.com/0j35