Categories
মেডিসিন

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট এর উপকারিতা

আজকে জানবো ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট এর উপকারিতা। ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট হলো ক্যালসিয়াম আর ভিটামিন ডি এর সমন্বয়ে তৈরি একটি ট্যাবলেট যা সাধারণত সব বয়সী মানুষ খেতে পারে যদি ক্যালসিয়াম এর অভাব থাকে। ক্যালসিয়াম হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাক্রো মিনারেল, যা আমাদের শরীরে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। মূলত সব খনিজ উপাদানের মধ্যে দেহে ক্যালসিয়ামের পরিমাণই সবচেয়ে বেশি; যার মধ্যে শতকরা ৯৯ ভাগ হাড় ও দাঁতের ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়ামের সাথে যুক্ত থাকে। আজ আপনাদেরকে আমরা ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট সম্পর্কে জানাবো। আপনারা আজ জানবেন –

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট এর উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেটের অপকারিতা
ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খেলে কি হয়
ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেটের নাম ও দাম
শরীরে ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির উপায়
ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট বেশি খেলে কি হয়

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার সময় তো এত সব আলোচনা জানতে আমাদের আর্টিকেলের সাথেই থাকুন। চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট এর উপকারিতা

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট সব বয়সী মানুষ খেতে পারলেও অযথা কারণে এটি গ্রহণ করার কোনো দরকার হয় না। আপনার শরীরে যখন ক্যালসিয়াম আর ডি এর অভাব হবে তখনই আপনি এটি গ্রহণ করবেন। একজন গর্ভবতী মহিলার গর্ভবতী হওয়ার পূর্বে তার শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি আর ক্যালসিয়াম আছে কি না তা চেক করে নিতে হয়,নয়তো নবাগত বাচ্চা ক্যালসিয়ামের অভাবে ভুগবে এবং মায়ের শরীর ভঙ্গুর হয়ে পড়বে। আসুন দেরি না করে ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট এর উপকারিতা সম্পর্কে অবগত হই-

১৷ হাড়ের সমস্যার সমাধান করে: অপ্রাপ্তবয়স্কে যাদের হাড় ভেঙে গেছে, হাড়ের ক্ষয় হয়ে গেছে,হাড়ের ঘনত্ব কমে গেছে বা হাড় বেঁকে গেছে তাদের জন্য ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়া খুব জরুরী। ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট হাড়ের গঠন বৃদ্ধি করে ও হাড় শক্ত, মজবুত করতে সাহায্য করে।

২৷ মাংসপেশীর ব্যথা কমাতে: হাড় ক্ষয় হলে মাংসপেশীর ব্যথা হবে এটাই স্বাভাবিক মাংসপেশী ব্যথা চিরতরে দূর করতে ও শরীরে পর্যাপ্ত ডি তৈরির জন্য ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট গ্রহণ করা জরুরি।

৩৷ দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: হাড় ছাড়াও দাঁতেও কিছু পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। দাঁত মজবুত ও শক্তিশালী করতে ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেটের জুরি নেই।

৪৷ হরমোনের কার্যকারিতা বজায় রাখতে: ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের হরমোন উৎপাদন ,হরমোনের ব্যালেন্স রক্ষা করতে সহায়তা করে। এছাড়াও মহিলাদের যখন মেনোপোজ হরমোনের ক্ষরণে কমে যায় তখন হাড় ক্ষয় হতে পারে। তাই বয়ঃসন্ধিকাল থেকে সব সময় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বা ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খেতে হবে।

৫৷ বাচ্চাদের শারীরিক বৃদ্ধি বাড়াতে: বাচ্চাদের শারীরিক বৃদ্ধি সাধারণত ছোটবেলাতেই বেশি হয়। হাড় ,পেশির যখন বৃদ্ধি হবে তখনই তো শারীরিক বৃদ্ধি নিশ্চিত হবে। এই শারীরিক বৃদ্ধির জন্য যথাযথ পুষ্টি দরকার। ক্যালসিয়াম ও ডি একসাথে বাচ্চাদের গ্রোথ বাড়াতে সাহায্য করে। তবে যেসব বাচ্চা খাবার থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান পায় না তাদের জন্য সাপ্লিমেন্ট খাওয়া খুবই ভালো।

৬৷ বাচ্চাদের জন্য: ক্যালসিয়াম অভাবজনিত রোগ রিকেটস এবং বৃদ্ধদের অভাবজনিত রোগ অস্টিওপ্যোরেসিস সমস্যাআর সমাধান আগে থেকে নিতে হলে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বা প্রয়োজনে ট্যাবলেট খেতে হবে।

গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট

গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মা চেষ্টা করেন নবাগত সন্তানের যথাযথ পুষ্টি নিশ্চিত করতে। গর্ভধারণের পূর্বেই মায়ের শারীরিক অবস্থা (অর্থাৎ শারীরিকভাবে মায়ের শরীরে সব পুষ্টি উপাদান যথাযথ আছে কি) জানা খুব জরুরী। তার মধ্যে একটি হলো মায়ের ক্যালসিয়াম ও ডি এর অভাব আছে কি না।

যদি গর্ভধারণের আগে জানা সম্ভব না হয় এবং পরে এসে বুঝতে পারেন মা ক্যালসিয়ামের অভাবে ভুগছেন এমতাবস্থায় মায়ের জন্য ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। এখন আসি কেন গর্ভাবস্থায় মাকে ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খেতে হবে সেই নিয়ে। গর্ভাবস্থায় যদি অপুষ্টিতে ভোগে তবে সন্তান মা থেকে সঠিক পুষ্টি পাবে না, ফলে সন্তানের হাড়ের সমস্যা যেমন হাড় বাঁকা, সহজে ভঙ্গুর হয়ে পড়া, হাড়ের ঘনত্ব কম হওয়া, পেশির সংকোচন প্রসারণের ব্যর্থতা ইত্যাদি হবে। এছাড়াও সন্তানের হরমোনাল সমস্যা, কম ওজন দেখা যাবে। এই সমস্যাগুলো দূর করতে গর্ভাবস্থায় মাকে ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়া খেতে হবে এবং শিশু জন্মের পরও মাকে সেটা চালিয়ে যেতে হবে কিছুদিন।

গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় মাকে ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা ভুল ডোজ খাওয়ানো হলে সন্তানের উপর তার প্রভাব পড়বে। সন্তানের সুস্থতার প্রতি লক্ষ করে গর্ভাবস্থায় মাকে সচেতন হতে হবে প্রতিটি খাবার খাওয়ার সময়, তেমনিভাবে ঔষধ খাওয়ার সময়ও সচেতন থাকা জরুরি।

গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম হলো:- মায়ের বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয় তাহলে মাকে ১০০০ মি.গ্রা এর ট্যাবলেট খেতে হবে। মায়ের বয়স যদি ১৮ এর বেশি হয় তবে ১০০০ -১৩০০ মি.গ্রা এর ট্যাবলেট খেতে হবে। মূলত মা কিরূপ অপুষ্টিতে ভুগছেন সেই অনুযায়ী তাকে ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। দেখা যেতে পারে উপরোক্ত পরিমাণের চেয়ে কম বেশি ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেটের প্রয়োজন হতে পারে মায়ের ওজন, উচ্চতা অনুযায়ী। তবে ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার আগে গর্ভবতী মাকে অবশ্যই নিকটবর্তী ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার অপকারিতা

সকল জিনিসের যেমন উপকারিতা আছে তেমনি কমবেশি অপকরিতাও থাকতে পারে এই বিষয়ে জ্ঞান রাখতে হবে। না জেনে বুঝে কোনো ঔষধ বা ট্যাবলেট খাওয়া উচিত নয়। চলুন তাহলে ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেটের অপকারিতা সম্পর্কে অবগত হই।

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেটের অপকারিতা বললে আসলে তেমন কিছু নেই, তবে ট্যাবলেটটি গ্রহণ করলে এক এক জনের শরীরে এক এক রকম কিছু লক্ষণ দেখা যায়। সেগুলো হলো:

  • বমি বমি পাওয়া ও দুর্বল লাগা।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হওয়া।
  • মাথাব্যথা ও শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথা অনুভব করা।
  • প্রেসার কম বেশি হওয়া, প্রস্রাবের সমস্যা হওয়া।

উপকারিতা জানার পাশাপাশি অপকরিতা জানলে সতর্ক থাকা যায়। তাই দুটোই জানতে হবে।

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খেলে কি হয়?

ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে এক্টিভ ফর্ম ভিটামিন D3 এর সমণ্বয়ে এই ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট তৈরি করা হয়। এখন আপনি ভাবতেই পারেন অন্য সব ভিটামিন আর মিনারেল বাদ দিয়ে কেন এই দুইটি উপাদান দিয়েই ট্যাবলেট বানানো হয়েছে এর উত্তরটা জানা খুব জরুরী, তা হলো- আপনার শরীরে যদি ভিটামিন ডি আর ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয় তখন আপনার হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়বে। যাদের ক্যালসিয়াম ও ডি এর অভাব ক্যালসিয়াম জনিত রোগ আছে তাদের জন্য ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলা দুষ্কর।

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট এর নাম ও দাম

বাজারে নানা ধরনের ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট পাওয়া যায়। এই নিয়ে আপনি একটু বিভ্রান্ত হতে পারেন প্রথমে । তবে কিছু বেসিক তথ্য জানা থাকলে আপনি নিজেই বুঝবেন আপনি কোনটা কিনবেন। ক্যালসিয়ামের সবচেয়ে এক্টিভ ফর্ম অর্থাৎ শরীরে দ্রুত শোষণ হয় বা ভালো শোষণ হয় হলো ক্যালসিয়াম কার্বনেট ও ক্যালসিয়াম সাইট্রেট। আর ভিটামিন ডি এর মধ্যে সবচেয়ে এক্টিভ ফর্ম হলো D3, যাকে কোলেক্যালসিফেরল বলা হয়। আপনি বাজারে গিয়ে সবার আগে দেখবেন এই উপাদানগুলো কোন ট্যাবলেটে আছে।

এছাড়াও আমাদের আজকের আর্টিকেলে কিছু ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেটের নাম আপনাদের জানাবো যা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে অর্থাৎ মানুষের কাছে চাহিদা বেশি। ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেটের কয়েকটি নাম ও তাদের বর্তমান দাম হলো-

১৷ Calbo-D Tablet: Calbo -D Tablet টি মূলত স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর একটি পণ্য।বেশিরভাগ সময় এটি ৩০০-৩৫০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়। আর এই প্যাকেটে সাধারনণত ৩০ পিস করে থাকে প্রতিটি পিসের দাম ১০-১৫ টাকা করে। তবে জায়গা ও ফার্মেসি অনুযায়ী দামের কম বেশি হতে পারে এবং কম পিচ কিনলে দামটাও বেশি রাখে। আপনি যদি প্যাকেটসহ কিনেন তাহলে দাম কম পাবেন।

২৷ Caldical-D Tablet: Caldical-D Tablet টি হলো জিসকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর একটি পণ্য। এটিও সাধারণত পিস ৭-১০ টাকা করে রাখে।প্রতিটি প্যাকেটে ১৫ বা ৩০ বা ৫০ টি করে থাকে এবং সেই অনুযায়ী দাম নির্ধারণ হয়।

৩৷ Calbon- D Tablets: Calbon-D Tablets টি হলো এরিস্টোফার্মা লিমিটেড এর একটি পণ্য। এই কোম্পানির ঔষধটি প্রতিটি ট্যাবলেটের মূল্য ৭-১০ টাকা করে রাখে। বিভিন্ন ফার্মেসি অনুযায়ী দামের ভিন্নতা হতে পারে।

৪৷ Calcin-D Tablet: Calcin-D Tablet টি হলো রেনেটা ফার্মা লিমিটেডের একটি পণ্য। মূলত ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেটের দাম প্রায় সব কোম্পানির কাছাকাছিই; দামের তেমন কোনো ভিন্নতা নেই। এই কোম্পানির ট্যাবলেটটি প্রতি পিস ৮-১০ টাকা করে বিক্রি হয়।

এখানে উল্লিখিত সব কোম্পানির ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট-গুলোর দাম বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন রকম হতে পারে; সাথে অনলাইনেও দামের অনেকটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও বাজারে আরো বিভিন্ন কোম্পানির ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট আছে, তবে এই উপরোক্ত কয়েকটি বাজারে বেশি প্রচলিত তাই আমাদের আজকের আর্টিকেলে এই কয়েকটা ট্যাবলেটের কথা বলা হয়েছে। আপনি চাইলে আপনার নিকটস্থ দোকানে যেসব ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট আছে সেগুলোও খেতে পারেন।

শরীরে ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির উপায়

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট হলো এক ধরনের সাপ্লিমেন্ট যেটা খাদ্য তালিকা বাদ দিয়ে কখনোই গুরুত্ব দেওয়া ঠিক নয়। খাদ্য তালিকা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি না পেলে তবেই ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খেতে হবে। শরীরে ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির অনেক উপায় আছে। আপনাদের কাছে আজ সেটা নিয়েও কথা বলবো যাতে আপনারা খাদ্য থেকে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে পারেন। ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির উপায়গুলো হলো-

  • দুধ খেতে হবে ও দুগ্ধজাতীয় অন্যান্য খাবার যেমন: দই, ছানা,পনির, মাখন,দই এর লাচ্ছি ইত্যাদি।
  • বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার যেমন চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, কুমড়োর বিচি, শিমের বিচি,চিয়া সিডস ইত্যাদি।
  • যে সকল মাছ সামুদ্রিক বা তৈলাক্ত সেগুলো খেতে হবে ,যেমন: পাঙ্গাস মাছ, ইলিশ মাছ, কোরাল মাছ ,স্যালমন ,রূপচাঁদ মাছ ইত্যাদি।
  • সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন ফলের রস বা শরবত খেতে হবে।

উপরোক্ত খাবারগুলো ছাড়াও আরো খাবার আছে যা আপনার শরীরে ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি করবে। তবে চেষ্টা করবেন সব সময় সব ধরনের তাজা শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার পাশাপাশি উপরোক্ত খাবারগুলো খাওয়ার।

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট বেশি খেলে কি হয়?

আমরা সবাই জানি যে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। তেমনি অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট বা ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে শারীরিক নানা সমস্যা হতেই পারে। চলুন জেনে নিই শরীরে ক্যালসিয়াম ডবি ট্যাবলেট বেশি হলে কি হয়-

  1. ক্যালসিয়ামের পরিমাণ রক্তে বেড়ে গেলে একে হাইপারকেলেসিমিয়া বলে।হাইপারকেলেসিমিয়া হলে বমি বমি ভাব, দুর্বলতা বোধ, ক্লান্তি অনুভব হয়। হাত, মুখ শুকিয়ে যায়।
  2. অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম খেলে হজমে সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়।
  3. বেশি পরিমাণ ক্যালসিয়াম কিডনি ফিল্টার করতে সমস্যা হয়। অনেক সময় কিডনিতে পাথর ও কিডনিতে সমস্যা হতে পারে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণের ফলে।
  4. আবার অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম খেলে রক্তচাপের পরিবর্তন হয় আবার অনেকে মনে করেন কারো কারো হার্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কিভাবে বুঝবো অতিরিক্ত পরিমাণ খেয়েছি কিনা বা কম খাচ্ছি কি না। কারণ অতিরিক্ত খেলেও সমস্যা হয় কম খেলেও সমস্যা হয়। একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দিনে ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে পারেন। আবার যেসব মায়েরা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ান তাদের বেশি ক্যালসিয়াম খেতে হয়। সাধারণত ১০০০ মিলিগ্রাম থেকে ১৩০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গর্ভাবস্থায় ও প্রসূতি মাকে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে ব্যক্তিবিশেষে এর পার্থক্য হতে পারে। খাবার থেকে এই চাহিদা পূরণ না হলে ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ ছোটদের কাশির সিরাপ এবং খাওয়ার নিয়ম

ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার সময়

আপনি যতই বিজ্ঞ হোন না কেন ঔষধ বা ট্যাবলেট খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে খাবেন। আপনাকে আপনার স্বাস্থ্য অনুযায়ী যে পরি পরিমাণ ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খেতে বলা হয়েছে আপনি সেই পরিমাণ ট্যাবলেটই খাবেন। ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট কোনো চুষে খাওয়ার ট্যাবলেট নয়। এটি পানি দিয়ে সাধারণ ঔষধের মতো খেতে হয়। ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার ভালো সময় হলো- রাতে বা সকালে খাওয়ার পর খেতে পারবেন। এছাড়াও খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে ও পরে অন্যান্য ঔষধ খাবেন না কারণ এতে শোষণে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

পরিশেষে এটাই বলবো যে, আপনি আমাদের আর্টিকেল থেকে ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট এর উপকারিতা ও বিস্তারিত তথ্য জেনে কারো পরামর্শ ছাড়াই এটি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন। কেননা আপনার শরীরে কি পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি দরকার তা একজন ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞই বলতে পারবেন। তাই শারীরিক কোনো পরীক্ষা না করে বা অভাবজনিত লক্ষণ না থাকা সত্বেও ক্যালসিয়াম ডি ট্যাবলেট খাবেন না, আর যদি খান তবে খাওয়ার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। পরবর্তীতে নতুন কোনো টপিক নিয়ে আবার আপনাদের কাছে আসবো সেই পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলের সাথেই থাকুন।