Categories
মেডিসিন

ছোটদের কাশির সিরাপ এবং খাওয়ার নিয়ম

শিশুদের ঠান্ডা বা সর্দি লাগলে আমরা শিশুদের কাশির সিরাপ দিয়ে থাকি। শিশুরা অত্যন্ত নাজুক হয়ে থাকে তাই কি ধরণের কাশির সিরাপ দেয়া হচ্ছে এ বেপারে পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত। শিশু সর্দি কাশি বা ঠান্ডায় আক্রান্ত হলে মা বাবা নিজেরা বা দোকানদার এর পরামর্শে কাশির সিরাপ দিয়ে থাকেন। এদের বেশির ভাগ এ ওভার দা কাউন্টার মেডিসিন অর্থাৎ এ ওষুধ গুলা কিনতে কোনো ডাক্তার প্রেসক্রিপশন লাগে না। এতে নানা ধরণের বিপদের মুখোমুখি হতে পারে আপনার ছোটো সোনামনি।চলুন জেনে নেই ছোটদের কাশির সিরাপ সম্পর্কে

ছোটদের কাশির সিরাপ

আমাদের দেশে শিশুদের জন্য অনেক ধরণের কাশির সিরাপ রয়েছে। শিশুদের কাশির সিরাপ এ শিশুদের জন্য উপযোগী মেডিসিন বিভিন্ন পরিমানে মিশ্রিত থাকে। শিশু শাস্ত্র গবেষণায় এসব কাশির সিরাপের উপাদান নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে আমাদের দেশে যে সিরাপ গুলা শিশুদের জন্য তৈরী করা হয়েছে তার সব গুলো নিরাপদ নয়। কিছু কাশির সিরাপ এ কোডিন, ডেকসট্রো-মিথোরফেন পাওয়া গেছে যা শিশুদের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক। এতে নানারকম পার্শ্বপ্রতিকিয়া দেখা দিতে পারে।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই অনিরাপদ কাশির সিরাপগুলো গ্রহণের ফলে শিশুদের শরীরে খিঁচুনি, ঝিমুনি, অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন, কিডনি ও লিভারের ক্ষতিসহ নানা সমস্যা তৈরি করে। শিশুদের জন্য বহুল ব্যবহৃত সালবিউটামল সিরাপ একটু বেশি মাত্রায় গ্রহণ করলেই অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন ও শরীরে কাঁপুনি হতে পারে। আবার অনেক কাশির সিরাপে হাইড্রোকার্বন নামক রাসায়নিক উপাদান থাকে। সাধারণত বুক ব্যথা কমানো ও কাশি দমনে এ সিরাপ ব্যবহৃত হয়। কিন্তু হাইড্রোকার্বন এক ধরনের ভয়াবহ নারকোটিক, যা শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। তাই শিশুদের কাশির সিরাপ দেয়ার বেপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।

হামদর্দ কাশির সিরাপ

হামদর্দ একটি ফার্সি শব্দ যার মানে অন্যের প্রতি সহানুভূতি। হাকিম হাফিজ আব্দুল মজীদ ১৯০৬ সালের ১লা আগস্ট দিল্লিতে প্রতিষ্ঠা করে ছিলেন হামদর্দ। ভারত উপমহাদেশের একটি বিখ্যাত ফার্মাটিকাল কোম্পানি হলো হামদর্দ। হামদর্দ ল্যাবরোটরীজ ইউনানী এবং হারবাল ওষুধের জন্য বিখ্যাত। পৃথিবীর বৃহত্তম ইউনানী ওষুদের প্রস্তুতকারক হলো হামদর্দ। হামদর্দ এর প্রায় ১৫০ টি পণ্যের মধ্যে তাদের হামদর্দ কাশির সিরাপ অনেক পরিচিত একটি সিরাপ।

 হামদর্দ কাশির সিরাপ
হামদর্দ কাশির সিরাপ

হারবাল ওষুধ শিল্পে হামদর্দ বাংলাদেশ এর একটি পরিচিত নাম। হামদর্দ কাশির সিরাপ দাবি করে যে তাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিকিয়া নেই। হামদর্দের ২৭০ টি চিকিৎসালয় আছে বাংলাদেশে। সর্দি কাশি হলেই এখন র এন্টিবায়োটিক খেতে হবে না। হামদর্দ এর কাশির সিরাপ টির নাম হলো সিরাপ এ্যালভাসিন। এ সিরাপ টির মূল উপাদান হচ্ছে বিভিন্ন ভেষজ এবং হার্ব।

হামদর্দ কাশির সিরাপ এর উপকারিতা

  • ফুসফুস এর বিষাক্ত উপাদান পরিশোধনে সাহায্য করে।
  • হামদর্দ কাশির সিরাপ শুষ্ক কাশি কমায়।
  • ঠান্ডা সর্দি কমাতে সাহায্য করে।
  • পার্শপ্রতিক্রিয়া মুক্ত।

অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করলে একটি সময় পর আমাদের শরীরে আর এন্টিবায়োটিক কাজ করে না। তাই সাধারণ সর্দি কাশি হলে এন্টিবায়োটিক না গ্রহণ করে হামদর্দ কাশির সিরাপ নেয়া যেতে পারে। হামদর্দ এর একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান এ সেবা পোছিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে।

টোফেন সিরাপ

টোফেন সিরাপ টি মূলত হাঁপানি রোগের চিকিৎসায় বেবহৃত হয়। এর এন্টি এলার্জিক গুণাবলী ও রয়েছে। সাডিয়াম ক্রোমাগ্লাইকেট এর মতো টোফেন সিরাপটি ও ঠান্ডাজনিত অসুখে ডাক্তার রোগীকে দিয়ে থাকেন। টোফেন সিরাপ এন্টিহিস্টামিন এর ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এন্টি-এ্যানাফাইল্যাকটিক গুণাবলী রয়েছে এ সিরাপটিতে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে এ সিরাপ টি নিয়মিত গ্রহণ করলে ইনহেলার এর মতো কাজ করে। এসব পরীক্ষায় অন্য সিরাপ গুলু অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে এন্টিহিস্টামিন কার্যকারিতায়। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে টোফেন সিরাপ গ্রহণে হাঁপানি রোগের তীব্রতা ও স্থায়িত্ব কমে যায়।

টোফেন সিরাপ খাবার নিয়ম

২ বছরের অধিক শিশুঃ ১ মিগ্রা. করে প্রতিদিন দুইবার খাবারের সাথে সিরাপ টি গ্রহণ করবে । খুব বেশি ঘুম যদি পায়, চিকিৎসা শুরুর প্রথম কদিন রাতের বেলা ডোজ কমিয়ে ০.৫ থেকে ১ মিগ্রা. করে ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী দেয়া যেতে পারে। এ সিরাপ টি গ্রহণে শিশুদের যেসব পার্শপ্রতিক্রিয়া হতে পারে :

  • পেট ফাঁপা
  • তন্দ্রাচ্ছন্নতা
  • মুখ গহ্বরের শুষ্কতা
  • সামান্য মাথা ঘোরা ভাব হতে পারে

তবে অবশ্যই চিকৎসকের পরামর্শ ছাড়া শিশুকে কোনোভাবেই টোফেন সিরাপ দেয়া যাবে না। এ বেপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।

কাশির সিরাপ এর নাম বাংলাদেশ

আমরা অনেকেই গলা খুসখুস, কাশির সমস্যায় ভুগে থাকি। তখন আমরা বোঝে না বোঝে কাশির সিরাপ খেয়ে থাকি। আমাদের দেশে এখন অনেক ধরণের কাশির সিরাপ পাওয়া যায়। কফ, কাশি হলেই আমাদের বাজার থেকে সিরাপ কিনে খাওয়া উচিত নয়। এতে অনেক সময় নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় যেমন: ঝিমুনি ,দুর্বলতা, মাথা ঘুরা, বমি বমি ভাব, সাময়িক ডায়রিয়া, কিডনি জটিলতা ইত্যাদি। এই কাশির সিরাপ এর নাম, বাংলাদেশ এ যেগুলা পাওয়া যায় তা আমাদের ভালো ভাবে জেনে রাখা উচিত।

এডলফ: কাশির সিরাপের্ নাম বললে প্রথমে এ সিরাপটির কথা চলে আসে। অপসোনিন ফার্মাসিটিকলস লিমিটেড এ সিরাপ টি বাজারে নিয়ে এসেছে। এটি ১০০ মিলি বোতল এ বাজারজাত করা হয়ে থাকে। এ সিরাপ টির মূল্য ৬৫ টাকা।

রিমুকফ: রিমুকফ সিরাপ টি কাশির সিরাপ হিসাবে খুব এ ভালো কাজ করে থাকে। ইনসেপ্টা ফার্মাসিটিকলস এ সিরাপ টি বাজারজাত করে থাকে। এটি সিরাপ টি দুইটি সাইজে পাওয়া যায়। প্রতি টি ১০০ মিলি রিমুকফ সিরাপের মূল্য ৫৫ টাকা এবং প্রতিটি ২০০ মিলি সিরাপের মূল্য ১১০ টাকা।

এডভ্যাস: বাংলাদেশ এর ওষুধ শিল্পে স্কয়ার ফার্মাসিটিকলস এর বেশ সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশ এ এডভ্যাট; কাশির সিরাপ হিসাবে খুব জনপ্রিয় ও পরিচিত একটি সিরাপ। স্কয়ার কোম্পানি এ সিরাপ টি বাজারে নিয়ে এসেছে। এ সিরাপ দুইটি সাইজে এ পাওয়া যায়। ১০০ মিলি সাইজের সিরাপ টির দাম হচ্ছে ৬০ টাকা। প্রতিটি ২০০ মিলি সিরাপের মূল্য ১১০ টাকা।

ই কফ: নাম শোনায় স্পষ্ট বোঝা যায় এটি কফের সিরাপ। খুসখুসে কফ এবং কাশের জন্য এ সিরাপ টি খুব এ ভালো। এডরুক ফার্মাসিটিকল এ সিরাপ টি বাজারজাত করে থাকে। এ সিরাপ টি মাত্র একটি সাইজে এ পাওয়া যায়। ১০০ মিলি সিরাপ টির বাজার মূল্য হলো ৫০ টাকা।

তুষকা: এ সিরাপ টি বহুল জনপ্রিয় এবং পুরানো কাশের সিরাপ। এ সিরাপ টির নাম শুনে নি এমন লোক খোঁজে পাওয়া কঠিন। এটি ঠান্ডা সর্দি এবং কাশের জন্য খুব এ উপকারী। প্রতি ১০০ মিলি তুষকা সিরাপ এর দাম ৬৫ টাকা। এটি বাজারে মাত্র একটি সাইজে এ পাওয়া যায়।

ইবেক্স: ইবনে সিনা ফার্মাসিকলস লিমিটেড কোম্পানি এ সিরাপ টি বাজারে নিয়ে এসেছে। এটি একটি স্বনামধন্য কোম্পানি। তারা মূলত ইউনানী এবং হারবাল ওষুধ বেশি বানিয়ে থাকে। এ কফের সিরাপ টি আমাদের কাশের জন্য অনেক উপকারী। প্রতি ১০০ মিলি সিরাপ এর দাম মাত্র ৩৫ টাকা। ইবনে সিনা তাদের সিরাপ ও ওষুধ অনেক সাশ্রয় মূল্যে বিক্রি করে থাকে।

কাশির সিরাপ বেশি খেলে কি হয়

ঠান্ডা সর্দি হলেই আমরা সবাই ছুটি কাশির সিরাপ এর দোকানে। আমরা ভাবি হয়তো সিরাপ খেলেই কাশি ভালো হয়ে যাবে। আসলেই কি তাই ?কাশি হলেই দোকান থেকে কফ সিরাপ কিনে খাওয়া কোনো সমধান হতে পারে না। হাইড্রোকার্বোন নামক একটি রাসায়নিক উপাদান কাশির সিরাপ এ থাকে যে কফ এবং বুকব্যথা উপশমে সাহায্য করে। এটা ছাড়া ও কফ সিরাপ এ আরো কিছু উপাদান থাকে যেমন গুয়াইফেনেসিন, সিউডোএফেড্রিন, ডেক্সট্ররমিথোমরফনি ও ট্রাই মিথোপ্রলিপ্রি। এ উপাদানগুলো অনেক সংবেদনশীল। তাই ভুলে কাশির সিরাপ বেশি খেয়ে ফেললে কি হয় তা অনেকেই জানতে চায়। নিচে কাশির সিরাপ বেশি খেয়ে ফেললে কি কি সমস্যা হতে পারে তা দেয়া হলো:

  • শরীরের রক্ত চাপ বেড়ে বা কমে যেতে পারে।
  • মাথা ঘুরা বা বমি বমি ভাব হতে পারে।
  • অনেকের খিঁচুনি দেখা দিতে পারে।
  • কারো কারো রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে।
  • ডায়াবেটিকস রোগীদের ক্ষেত্রে সুগার ফল হতে পারে। ব্লাড প্রেসার কমে রোগী জ্ঞান ও হারিয়ে ফেলতে পারে।
  • সিরাপ এ যে মরফিন থাকে তা স্নায়ু এবং পেশিকে দুর্বল করে ফেলতে পারে।
  • পাতলা পায়খানা বা সাময়িক ডাইরিয়া দেখা দিতে পারে।
  • অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন দেখা দিতে পারে।
  • অনেকের কিডনি, যকৃতে জটিলতা দেখা দিতে পারে।কাশি হলে অবশই ডাক্তার দেখিয়ে তার আসল কারণ বের করতে হবে। যদি কেউ ভুলে কাশির সিরাপ বেশি খেয়ে ফেলে তাহলে দেরি না করে অব্যশই তাকে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যেতে হবে। আশা করি কাশির সিরাপ বেশি খেলে কি হয় তা আপনারা বুজতে পেরেছেন।

    বড়দের কাশির সিরাপ

    ঠান্ডা জ্বর সর্দি কাশি হলে বড়দের কি ধরণের সিরাপ খেতে হয় তা অনেকেই জানতে চায়। তবে আপনি যে সিরাপ এ খান না কেন আগে ডাক্তার থেকে পরামর্শ নিয়ে তারপর খাবেন। এছাড়া সব ওষুধ কোম্পানি তাদের সিরাপ এর গায়ে পরিমান ও দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে। ভালোমতো পরে তার পর ওষুধ খাবেন। বাংলাদেশ এ এখন অনেক ওষুধ কোম্পানি আছে যারা বড়দের কাশির সিরাপ নিয়ে কাজ করে থাকে। যেমন ইনসেপ্টা ,স্কোয়ার,ইবনে সিনা। তারা খুব ভালো মানের বড়দের কাশির সিরাপ বাজারে নিয়ে এসেছে। যেমন ধরুন এডভ্যাস, ই কফ, ইভেক্স ইত্যাদি। সিরাপ কিনার পূর্বে অবশই সিরাপ এর মেয়াদ আছে কিনা দেখে কিনবেন। মেয়াদ উর্ত্তীণ সিরাপ খেলে আপনি মারা ও যেতে পারেন বিষক্রিয়া হয়ে। এছাড়া ঠান্ডা সর্দি হলে নিচের কাজ গুলো করুন:

    প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন। গরম পানির দ্বারা ভাপ নিন এতে কফ অনেক পাতলা হয়ে যাবে। হালকা গরম পানিতে একটু নুন দিয়ে কুলকুচি বা গার্গল করুন। মুখে কোনো লজেন্স, লবঙ্গ বা আদা রাখলেও আরাম পাবেন। এছাড়া নবজাতক কে ঠান্ডা সর্দি হলে গরম দুধ ও পানীয় দিতে পারেন। লেবু ও মধু একসাথে মিশিয়ে দিতে পারেন। ঠান্ডা বাতাস যাতে না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। গরম ভাপের বেবস্থা করতে পারেন। এতে নবজাতক আরামবোধ করবে।

    নবজাতকের কাশির সিরাপ

    এ সময়ে নবজাতক শিশুরা ভাইরাল ইনফেকশন, সর্দি, কাশি, ঠান্ডায় ভুগে থাকে। অনেকে নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাইটিস এ আক্রান্ত হয়ে পরে। তাই এসময় নবজাতকের বেপারে সতর্ক থাকতে হবে। অনেক মায়েরা নবজাতকদের কাশির সিরাপ এর নাম জানতে চায়। কিটোটিফেন সিরাপ সর্দি ও কাশির জন্য(৬ মাস থেকে ৩ বছর- আধা চামচ x ২বার/ ৩ বছরের উপর- এক চামচ x ২বার) ৩ থেকে ৫দিন। সঙ্গে যদি শ্বাসকষ্ট থাকে তাহলে সালবিউটামল সিরাপ: (২ বছর থেকে ৫ বছর বয়স- ১ চামচ করে x দিনে তিনবার) এবং ৩ থেকে ৫ দিন। তবে অব্যশই ডাক্তার এর সাথে আগে পরামর্শ করে নিবেন। যদি কাশি ৩-৫ দিনের মধ্যে ভালো না হয় অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি কাশির ক্ষেত্রে (হাঁপানি ও জন্মগত হৃদরোগ) এবং কাশির সঙ্গে জ্বর থাকলে (নিউমোনিয়া) অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

    বেক্সিমকো কাশির সিরাপ

    বেক্সিমকো ফার্মাসিটোকলস আমাদের দেশের অত্যন্ত স্বনামধন্য ওষুধ কোম্পানি। এছাড়া বেক্সিমকো একটি বহুজাতিক কোম্পানি যা ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ঠান্ডা সর্দি ,কাশির জন্য বেক্সিমকো বেশ কিছু সিরাপ বের করেছে। নিচে বেক্সিমকো কাশির সিরাপ এর তালিকা দেয়া হলো:

    বুড়াটাস: এ সিরাপটির মূল উপাদান হচ্ছে বুড়াটাস যা বুটামিরেট সাইট্রেটের একটি প্রস্তুতি,এটি (শুষ্ক) কাশির লক্ষণীয় চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। দিনে ৩ বার এ সিরাপ ৫ মিলি করে খাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

    ডেক্সট্রিম: ডেক্সট্রিম হল ডেক্সট্রোমেথরফান হাইড্রোব্রোমাইড, ফেনাইলেফ্রাইন হাইড্রোক্লোরাইড এবং ট্রিপ্রোলিডিন হাইড্রোক্লোরাইডের সংমিশ্রণ। এ সিরাপ খাবেন যদি আপনার সামান্য গলা বা শ্বাসনালীর জ্বালার কারণে কাশি থাকে। সর্দি বা হাঁচি থাকে, নাক বা গলা চুলকায়, চুলকানি বা নাক বন্ধ থাকে। ১২ বছরের উপরে যাদের বয়স তারা ৫ মিলি করে প্রতি ৪ ঘন্টা অন্তর অন্তর খাবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে ক্ষণস্থায়ী উচ্চরক্তচাপ, শুষ্ক মুখ, অস্থিরতা, ধড়ফড়, অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া যেমন ফুসকুড়ি, বুকে শক্ত হওয়া, শ্বাসনালী নিঃসরণ ঘন হওয়া, বিষাক্ত সাইকোসিস এবং রক্তের ডিসক্রেসিয়া অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

    মুকোসল: মুকোসল একটি প্রেসক্রিপশন ঔষধ এবং এটি এমব্রোসোল এর একটি সম্মিলিত প্রস্তুতি।মুকোসল কাশির লক্ষণ উপশম করার জন্য বেবহার করা হয়ে থাকে।

    কত মিলিকরে নিতে হবেসিরাপ

    2-5 বছর বয়সী: 2.5 মিলি (1/2 চা চামচ), দিনে 2-3 বার
    5-10 বছর বয়সী: 5 মিলি (1 চা চামচ), দিনে 2-3 বার
    10 বছর বয়সী এবং প্রাপ্তবয়স্ক: 10 মিলি (2 চা চামচ), দিনে 3 বার

    সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

    সমস্ত ওষুধের মতো, মুকোসল ওপার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যদিও সবার সাথে এমন হয় না ।মুকোসল এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া যেমন ত্বকের এলারজি, ছত্রাক বা অ্যাঞ্জিওনিউরোটিক শোথ, এপিগ্যাস্ট্রিক ব্যথা, পেট অতিরিক্ত ভরাট অনুভূতি।
    আরোও পড়ুনঃ মেডিপ্লাস টুথপেস্ট এর উপকারিতা

    বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমাদের পরামর্শ থাকবে যেকোনো ধরণের ওষুধ গ্রহণের পূর্বে অব্যশই ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে তারপর খাবেন। এতে সিরাপ বা ওষুধ গ্রহণ থেকে ভবিষৎ স্বাস্থ্য জটিলতা হওয়ার সম্ভনা থাকবে না।

One reply on “ছোটদের কাশির সিরাপ এবং খাওয়ার নিয়ম”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *