Categories
মেডিসিন

সিপ্রোসিন সিরাপ কেনো খেতে হয় জেনেনিন

সিপ্রোসিন সিরাপ কেনো খেতে হয় আমরা অনেকেই জানি না। আজকের আলোচনায় থাকছে সিপ্রোসিন নিয়ে। ধরুন আপনার দেহে অনেকগুলি রোগ রয়েছে৷ এক্ষেত্রে আপনাকে যেটি করতে হবে সেটি হলো সেই প্রতিটি রোগের জন্য খেতে হবে এক একটি ঔষধ। কিন্তু এটি কি আদৌও সম্ভব? আমরা মোটামুটি সকলেই জানি মাত্রাতিরিক্ত ঔষধ সেবনের ফলেও কিন্তু বাড়তি রোগ জন্মাতে পারে। এক্ষেত্রে সব রোগের সাথে একসাথে টেক্কা দিতে কাজ করবে সিপ্রোসিন সিরাপ। যে সিরাপ সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনার প্ল্যানিং সাজিয়েছি। এছাড়াও আজকের আলোচনায় বোনাস হিসেবে থাকছে সিপ্রোসিন আই ড্রপসহ বেশকিছু চোখ ও কানের ড্রপ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, আমাদের আজকের এই আয়োজন কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে!

সিপ্রোসিন সিরাপ কি

মূলত সিপ্রোসিন সিরাপ হলো এমন একটি অ্যান্টিবায়োটিক যা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসা করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটিকে অনেকেই সিপ্রোসিন ড্রাই সাসপেনশনও বলে থাকে। বলে রাখা ভালো এই সিপ্রোসিন সিরাপে সক্রিয় উপাদান হিসাবে সিপ্রোফ্লক্সাসিনের আধিক্য রয়েছে। যা ব্যাকটেরিয়ার বেড়ে যাওয়ার হারকে থামিয়ে দিয়ে শেষ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে।

আমাদের দেহে বিশেষ করে শ্বাসযন্ত্রের ট্র্যাক্ট, পাকস্থলী, অন্ত্র, ফুসফুস, হাড় এবং জয়েন্টগুলোতে যে নরম টিস্যুগুলি রয়েছে, সে নরম টিস্যুগুলিতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের মাত্রা রোধ করতে এটি ব্যবহৃত হয়। যার ফলে কমে যায় দেহের ৮০% রোগের পরিমাণ। সিপ্রোসিন সিরাপ কেনো খেতে হয় বা এর ব্যবহারকালীন সতর্কতা কি কি সে-সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।

সিপ্রোসিন সিরাপ কেনো খেতে হয়

সিপ্রোসিন সিরাপ সম্পর্কে বেশকিছু তথ্য জানতে পেরে ইতিমধ্যেই হয়তো আপনার মনে প্রশ্ন জেগেছে, সিপ্রোসিন সিরাপটা আসলে কেনো খেতে হয় বা এর প্রয়োজনীয়তাটাই বা কি!

মূলত আপনার দেহে যদি বহুবর্ষজীবী, মৌসুমী এলার্জিক রাইনাইটিস, ঠান্ডা ছুলি, হাঁপানি উপসর্গ, লিভার রোগ, যকৃতের ডিসঅর্ডারস, আগম অ্যালার্জি, খাবার কারণে অ্যালার্জিক চোখ উঠা, ধারণক্ষমতা পরিবর্তন, রক্ত বা রক্তরস এলার্জি প্রতিক্রিয়া, ক্ষুধামন্দার রোগ থেকে থাকে তবেই আপনি এই সিপ্রোসিন সিরাপ ব্যবহার করতে পারবেন।

কেননা উপরে বর্ণিত প্রতিটি রোগের মূল কারণ হলো দেহের কোষে তৈরি হওয়া ব্যাকটেরিয়া। মূলত এই ব্যাকটেরিয়াকে তাড়াতে ব্যবহার করা হয় সিপ্রোসিন সিরাপ।

সিপ্রোসিন সিরাপ কিভাবে ব্যবহার করে

সিপ্রোসিন সিরাপ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না জানলে এর কার্যকারিতা আপনার দেহের উপর এফেক্ট ফেলতে পারবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে যেসব নিয়ম মানতে হবে সেসব নিয়ম হলো:

  • ব্যবহারে পূর্বে সিরাপটিকে আপনার ডাক্তার দ্বারা নির্দেশিত সিরাপ হিসেবে টেস্ট করে আনুন বা পরামর্শ নিন।
  • সিরাপ ব্যবহারের আগে অবশ্যই ঔষধের লেবেলের নির্দেশাবলী সাবধানে পড়ে নিন।
  • ব্যবহারের আগে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিন।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণে দিনে ২ থেকে ৩ বার এটি ব্যবহার করতে থাকুন।

সিপ্রোসিন সিরাপ ব্যবহারে সতর্কতা কি

সতর্কতা হলো আমাদের নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় অস্ত্র। ঔষধ গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও আপনাকে অবলম্বন করতে হবে সর্বোচ্চ সতর্কতা। এবার আমরা একে একে জেনে নিবো সিপ্রোসিন ব্যবহারে সতর্কতাগুলি কি কি সে-সম্পর্কে।

আপনার যদি সিপ্রোফ্লক্সাসিন বা সিপ্রোসিন ড্রাই সাসপেনশন এর কোনো উপাদান রিলেটেড অ্যালার্জি থাকে তবে আপনি এই সিরাপ ব্যবহার করতে পারবেন না।

রিসেন্টলি আপনি যদি নিজস্ব রোগ সারাতে টিজানিডিন ঔষধ সেবন করে থাকেন তবে আপনি এই সিপ্রোসিন সিরাপ ব্যবহার করতে পারবেন না।

রিসেন্টলি আপনি যদি অন্যান্য কুইনোলন ঔষুধ যেমন: মক্সিফ্লক্সাসিন, নরফ্লক্সাসিন, অফলক্সাসিন বা নালিডিক্সিক অ্যাসিড গ্রহণ করেন তবে আপনি কোনোভাবেই সিপ্রোসিন সিরাপ ব্যবহার করতে পারবেন না।

স্কিলড চিকিৎসকের মতে স্তন্যপান করানো শিশুর সম্ভাব্য ক্ষতির সৃষ্টির কারণে এই সিপ্রোসিন সিরাপ বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় ব্যবহার করা উচিত নয়।

বাচ্চার মায়েরা বিশেষ করে যাদের ক্ষেত্রে সিপ্রোসিন সিরাপ নেওয়া আবশ্যক তারা বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় Ciprocin Dry Suspension ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

আপনি যদি গর্ভবতী হোন কিংবা মনে করেন আপনি গর্ভবতী হতে পারেন বা গর্ভাবস্থার পরিকল্পনা করছেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তবেই সিপ্রোসিন সিরাপ গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশে সিপ্রোসিন সিরাপের দাম কত

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সিপ্রোসিন সিরাপ ২৫০ মিলিগ্রামের দাম মাত্র ১০০/-। যাদের এই সিরাপটি গ্রহণ করা বর্তমানে আবশ্যক হয়ে গেছে তারা চাইলে অনলাইনে কিংবা ঘরের কাছে কোনো ফার্মেসি থেকে সিরাপটি কালেক্ট করে নিতে পারেন।

চোখের ড্রপের নামগুলি কি কি

চোখের ড্রপের নামগুলি কি কি
চোখের ড্রপের নামগুলি কি কি

সিপ্রোসিন সিরাপের আলোচনা শেষ করার পর এবার আসি বোনাস পয়েন্টে। চোখের বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে প্রত্যেকের প্রাথমিক ধারণা থাকা উচিত। সবচেয়ে বড় ব্যাপার চোখে কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ড্রপ দেবেন না। তবে কিছু প্রাইমারি ড্রপ সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো৷

লিউকিব্রিন: এটি মূলত চোখের ড্রপ হিসাবে ব্যবহার করার জন্য তৈরি করা হয়ে থাকে। যা সাধারণত চোখের উচ্চ চাপকে হ্রাস করতে সাহায্য করে। কার্বোনিক অ্যানহাইড্রেসের প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করা এই ড্রপ চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে তবেই ব্যবহার করতে হবে।

আর্টিফিশিয়াল টিয়ার: চোখের জ্বালাপোড়া বেড়ে হলে এই ড্রপ ব্যবহার করা হয়। রোগীর কম্পিউটারের অত্যধিক ব্যবহার, অত্যধিক বই পড়া, রোদের আবহাওয়া, গরম বা এয়ার কন্ডিশনার এবং নির্দিষ্ট কোন ওষুধ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে ড্রপটি ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে।

মক্সিফ্লক্সাসিন: আক্রান্ত চোখে এক ফোঁটা করে দিনে ৩ বার প্রয়োগ করলে চোখের ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা সমাধান হয়৷ এটির অতিরিক্ত ব্যবহার আবার চোখের ক্ষতি বয়ে আনতে পারে৷ সুতরাং ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে এবং এটি ব্যবহার করার সময় বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

আইমক্স: এটিও আরেকটি জনপ্রিয় আই ড্রপ। এটি ব্যবহারের পূর্বে আপনার ডাক্তারকে নিজের বর্তমান ঔষধের তালিকার সম্পর্কে অবগত করতে হবে। ব্যবহারের পর বেলায় সরাসরি আলো এবং তাপ থেকে দুরে রেখে এটিকে যত্নে রাখতে হবে।

মক্সিনিস এলপি: কর্টিকোস্টেরয়েড একটি ড্রপ হলো এই মক্সিনিস এলপি আই ড্রপ।ফোলা, চোখের লাল হয়ে যাওয়া বা চোখের জ্বালা কমাতে ব্যবহৃত হয় এই আই ড্রপ। এটি মৌসুমী এলার্জি রাইনাইটিস কমাতেও সাহায্য করে। আপনি যদি চোখের রেডনেস, চোখের ফোলাভাব, চোখের সংবেদনশীলতা, শুকনো চোখ, মাথা ব্যাথা এবং খিটখিটে মেজাজ দূর করতে চান তবে এই ড্রপ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ইউজ করতে পারেন।

সিপ্রোসিন সিরাপের পাশাপাশি বোনাস ইনফো হিসেবে বেশকিছু চোখের ড্রপ সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করলাম। আশা করি আপনার আই রিলেটেড যেকোনো রোগ সারাতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী উপরের ড্রপগুলি ইউজ করবেন।

কানের ড্রপের নামগুলি কি কি

সিপ্রোসিন সিরাপ, আই ড্রপের পাশাপাশি কানের কিছু ড্রপ সম্পর্কে জেনে নিলে কেমন হয়? কানের সমস্যা তো মোটামুটি আমাদের সকলের মাঝেই দেখা যায়। সঠিক সময়ে সঠিক ডাক্তারের গাইডলাইন নেওয়ার পাশাপাশি কানের বিভিন্ন ড্রপ সম্পর্কেও আমাদের জানতে হবে।

সিপ্লক্স: এটি একটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ। যা গলা, ত্বক, কান, নাক, সাইনাস, হাড়, শ্বাসযন্ত্র এবং মূত্রনালীর ব্যাকটেরিয়া এডিকশনকে রোধ করে।

ক্লোরফেন: ক্লোরফেন এমন একটি কানের ড্রপ যা আপনার কানের ব্যাকটেরিয়া এফেক্ট, মুখের আলসার এবং দাঁতের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করবে।

ওটেক এসি প্লাস: এই ইয়ার ড্রপটি প্রাথমিকভাবে কানের সংক্রমণের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। ড্রপটি ইউজ করার প্রায় ২ ঘণ্টা পরে এর কার্যকারিতা লক্ষ্য করা যায়।

ওল্টাউর: এটি এমন একটি অ্যান্টিবায়োটিক ড্রাগ যা কানের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে৷ আপনি চাইলে সেই ক্যাটাগরির টেবলেট বা ক্যাপসুলও খেতে পারেন৷
আরোও পড়ুনঃ সিনকারা সিরাপ খেলে কি মোটা হয়
আরোও পড়ুনঃ জেনে নিন বার্না ক্রিম কি কাজ করে

পরিশেষে: সিপ্রোসিন সিরাপ, কিছু আই ড্রপ এবং কিছু ইয়ার ড্রপের কাজ, সিপ্রোসিন সিরাপ কেনো খেতে হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি বিভিন্ন তথ্য একসাথে পেয়ে কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছে। ধন্যবাদ।

One reply on “সিপ্রোসিন সিরাপ কেনো খেতে হয় জেনেনিন”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *