Categories
খাদ্য তালিকা

রমজান মাসের স্বাস্থ্য সম্মত খাদ্য তালিকা

আমরা যেহেতু মুসলিম তাই আমাদের সকলের যানা থাকা দরকার রমজান মাসে কি ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। আজকে আলোচনা করবো রমজান মাসের স্বাস্থ্য সম্মত খাদ্য তালিকা নিয়ে চলুন তাহলে যেনে নেওয়া যাক…

রমজান মাসের স্বাস্থ্য সম্মত খাদ্য তালিকা

ইফতার

১.আমরা যারা রোজা রাখি তাদের জন্য ইফতার স্মপর্কে জানা থাকে দরকার। আজকে আলোচনা করবো রমজান মাসের মান স্বাস্থ্য সম্মত খাদ্য তালিকানিয়ে। যখন করবেন অবশ্যি মনে রাখবেন সারাদিন রোজা রেখে তেলে ভাজা খাবার আগে খবেন না। আপনি সবার আগে পানি পান করবেন। এর পর কিছু খাবেন। তাহলে আর কোন সমস্যা হবেনা।

২. আমরা যারা সারাদিন রোজা রাখি ইফতারের সময় ভালো খাবার খেতে মন চায় বেশি। তেলে ভাজা খাবার বেশি না খেয়ে অল্প করে খাবেন। তাহলে গ্যাস স্মস্যা আর দেখা দিবে না। আমরা জানি পেঁয়াজু/ বেগুনী/ কাবাবঃ ইফতারের সময় আমাদের দেশে পেঁয়াজু বেগুনী থাকবেই। এই সব তেলে আজা খাবার বেশি করে না খেয়ে অল্প করে খেতে হবে। যেমনঃ ২টি পেঁয়াজু বা ২টি বেগুনী অথবা ২টি কাবাব খেতে পারেন। ১টি পেঁয়াজু আর একটি বেগুনী, একটি বেগুনী আর একটি কাবাব এভাবেও মিলিয়ে খেতে পারেন। খেয়াল রাখবেন যেন এ ধরনের খাবার ২টির বেশি না খান। কারণ প্রতিটি পেঁয়াজু, বেগুনী বা অন্য যে কোন তেলে ভাজা খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ ৫০ থেকে ৭০ এর মত হতে পারে। একটি টিকিয়া কাবাবে ক্যালরি হলো ৮০ আর চপে ৮৫। যদি আপনি সিঙ্গারা খান তাহলে অবশ্যই একটি সিঙ্গারা খাবেন কারণ এক্টী সিঙ্গারাতে ১৪০ ক্যালরি থাকে যা ২টি রুটির সমান! আর যদি আপনি সিঙ্গারা খান তাহলে পেঁয়াজু/ বেগুনী/ কাবাব খাবেন না। এতে করে অন্য সমস্যা হতে পারে।

৩.হালিমঃ আমরা জানি যে সারাদিন রোজা রাখার পর জাল জাতীয় খাবার বেশি খেতে মন চায় তাই আপনি হালিম কেতে পারেন। তবে বেশি খাওয়া যাবে না। কারন হালিমে বিভিন্ন রকমের ডাল আর মাংস মেশানো থাকে তাই এতে প্রচুর ক্যালরি থাকে। এক বাটি ভরে হালিম না খেয়ে আধা বাটি হালিম খান। তবে দোকানের হালিম না খেয়ে বাসায় তৈরি করুন। এতে করে আর কোন সমস্যা হবে না।

৪. ছোলা মুড়িঃ ইফাতারের সময় যদি হালিম না খান তাহলে এক বাটি ছোলা মুড়ি খান কিন্তু যদি আধা বাটি হালিম খান তাহলে আধা বাটি ছোলা মুড়ি খান। কারণ এক কাপ মুড়িতে ৭০ ক্যালরি। আপনি যদি একই সাথে হালিম আর এক বাটি ছোলা মুড়ি খান তাহলে সেটাতে অনেক ক্যালরি হবে।

৫. শরবতঃ ইফাতের সময় অবশ্যই সরবত খাবেন। কারন সারাদিন রজা থাকার পর ভেতরে অনেক পানি শূন্যতা থাকে তাই ইফতারের সময় সরবত খাবেন। আবার অতিরিক্ত চিনি দিয়ে শরবত না তৈরি করে ডাবের পানি পান করুন। শরবত যে একদম ছেড়ে দিবেন তা বলছিনা। ৩/৪ দিন পর পর চিনি মেশানো লেবুর শরবত বা অন্য কোন ফলের শরবত খেতে পারেন। কিন্তু বাইরে থেকে রঙ মেশানো শরবত এনে খাবেন না। বাহিরের সরবত অতিরিক্ত খেলে ক্ষতি করতে পারে।

৬. ইফতারের সময় শশা খেতে পারেন। কারন শশাতে পানি রয়েছে । সারাদিন রোজা রাখার পর একটু শশা খেতে পারলে অনেক টা পানি শূন্যতা পূরন করবে।

৭. ইফতারের সময় আপনি কলা/ একটি আপেল/ লিচুর সময় হলে ৩/৪ টি লিচু খেতে পারেন।

রোজার মাসে রাতের খাবার

০১.রাতের জন্য একটি রুটি অথবা আধা কাপ ভাত/ অর্ধেক পরোটা যে কোন একটি খাবেন। তাহলে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

০২. রাতের রাখার সময় তখন ২ টুকরো মাছ অথবা মাংস। ২টি মাছ আর ২টি মাংসের টুকরো এক সাথে খাওয়া যাবেনা। এতে করে খাওয়ার রুচি কমে যাবে।

০৩. যে কোন শাক।
০৪. ২/৩ চা চামচ টক দই।

সেহেরি

দেখা যায় অনেকেই সেহেরিতে কিছু খান না। আবার কেউবা এক বা দুই কাপ চা খান। কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই খারাপ। অবশ্যই আপনি সেহেরিতে কম খান বা বেশি খান কিন্তু নিয়ম মেনে খাবেন। যেমন –

ক) আধা কাপ ভাত অথবা একটি রুটি
খ) ১ টুকরো মুরগীর মাংস
গ) সবজি ১ কাপ
ঘ) টক দই ১ কাপ

বিশেষ করে যারা টক দই খেতে পারেন না তারা ১ কাপ সর ছাড়া দুধ খেতে পারেন। এতে করে অনেক ভালো উপকার পাবেন।

রমজান মাসে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে কিছু টিপস

১. যদি পিৎজা খেতে চান তাহলে এক স্লাইসের বেশি খাবেন না। এক স্লাইসে প্রায় ৩০০ ক্যালরি।
২. বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট এ ফ্রাই করা মুরগীর প্রতিটি টুকরোতে প্রায় ২০০ ক্যালরি থাকে। তবে এটি বুঝে শুনে খাবেন। নতুবা সমস্যা হতে পারে।

৩. এটিও সাবধানে খাবেন কারন, ছোট একটি প্যাকেটের ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এ ২৭০ ক্যালরির মত থাকে।

৪. ঝাল খাবার খাবেন না।

৫. ইফতার করার পর কিছু খাওয়ার পর প্রচুর পানি পান করবেন।

৬. যদি গ্রিন টি পান করতে পারেন তাহলে ভালো, নাহলে দুধ চিনি ছাড়া চা পান করুন। এছাড়া ইফতারে এমনিতেই প্রচুর ক্যালরি যুক্ত খাবার খাওয়া হয় তাই চায়ের সাথে দুধ চিনি মিশিয়ে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণের কোন প্রয়োজন নেই। বিশেষ করে রমজান মাস শুরু হওয়ার ৩/৪ দিন আগে থেকেই ক্যাফেইন গ্রহণ কমিয়ে দিলে ভালো। কারণ যারা বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ করেন তারা রোজা পালনের কারণে হঠাৎ সারা দিন ক্যাফেইন গ্রহণ না করলে মাথা ব্যথায় ভোগেন। তাই এটি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন।

৮. ইফতারের পর অন্তত ২০-২৫ মিনিট হাঁটুন।

৯. সেহেরিতে সময় নিয়ে উঠুন যেন শেষ মুহূর্তে তাড়াতাড়ি খেতে গিয়ে বেশি খেয়ে না ফেলেন। এবং কিছুটা সময় হাটার সময় পান। ভোর রাতে সেহেরি তে খাওয়া শেষ করে কমপক্ষে ১৫ মিনিট হাঁটুন।
এভাবে একটু নিয়ম মেনে আর ক্যালরি হিসাব করে যদি খান তাহলে আশা করছি এই মাসে তেলে ভাজা আর দোকানের খাবার খেয়ে আপনার ওজ়ন বাড়বেনা ইনশাল্লাহ। বিশেষ করে যাদের ওজন বেশি তারা বাসার বাইরে খেলে এমন ভাবে খাবেন যেন আপনাদের ক্যালরি গ্রহণ ১৪০০ এর মধ্যে থাকে।

One reply on “রমজান মাসের স্বাস্থ্য সম্মত খাদ্য তালিকা”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *