Categories
খাদ্য তালিকা

ভিটামিনযুক্ত সুষম খাবার তালিকা

দেহকে সুস্থ রাখার জন্য প্রধান নিয়ামক হলো তিনবেলার সুষম খাবার তালিকা । আমাদের খাবারে সাধারণত ৬টি উপাদান থাকে।সেগুলো হলো শর্করা, আমিষ, স্নেহপদার্থ, ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং পানি। এই খাদ্য উপাদানগুলো পরিমাণ মতো থাকলে সেই খাবারগুলোকে সুষম খাবার বলা হয়ে থাকে। তবে শুধু সুষম খাবার গ্রহণ করলেই স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে এমনটি কিন্তু না, স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আপনাকে এই সুষম খাবারগুলো খেতে হবে সময়মতো। আর তাই সঠিক একটি সুষম খাবার তালিকা তৈরি করতে হবে। যে তালিকায় সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবার সঠিক পরিমাণমত রাখতে হবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক সুষম খাবারের তালিকাগুলো –

ভিটামিনযুক্ত সুষম খাবার তালিকা

পালং শাকঃ–পালংশাক এমন একটি সুষম খাবার যেটি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আপনারা জানেন পালংশাকে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে, যেটি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। এই ভিটামিনগুলো আমাদের মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সেইসাথে পালং শাক আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরীতে সহায়তা করে থাকে।

কমলালেবুঃ– আর একটি ভিটামিনযুক্ত সুষম খাবার হলো কমলালেবু। এটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি ত্বকের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

কমলা
কমলা লেবু

গাজরঃ– সুষম খাবারের মধ্যে গাজর হলো অত্যন্ত উপকারী শরীরের জন্য। আপনারা জানেন গাজরে থাকে ২৮ গ্রাম ভিটামিন কে এবং এই সুষম খাবারটি শরীরের বিভিন্ন রোগ দূর করতে সাহায্য করে। ভিটামিন কে যুক্ত গাজর আমাদের নার্ভাস সিস্টেম শক্ত রাখে। তাই আমরা যদি দৈনিক অন্তত এক গ্লাস গাজরের রস সুষম খাবারের তালিকায় রাখি, তাহলে এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে।

গাজর
গাজর

মিষ্টি আলুঃ- ভিটামিনযুক্ত সুষম খাবারের তালিকায় আমাদেরকে মিষ্টি আলু অবশ্যই রাখা উচিত।কেননা মিষ্টি আলুতে রয়েছে ভিটামিন ই, যা আমাদের দেহের টিস্যু ও ফুসফুস গঠনের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। যেহেতু মিষ্টি আলু একটি সুষম খাবার এবং এটিতে রয়েছে ভিটামিন ই তাই, ভিটামিনযুক্ত সুষম খাবারের তালিকায় এটি আমাদের অবশ্যই রাখা রাখা জরুরি। সেইসাথে আপনারা জানেন আরও অনেক সুষম খাবার রয়েছে যেমন- আপেল, দুধ,ডিম,লেবু,সবজি,মাছ, টমেটো ইত্যাদি। এগুলোতে বেশি পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন, যার ফলে আমাদের ভিটামিনযুক্ত সুষম খাবারের তালিকায় প্রতিদিন এসব খাবার রাখা উচিত।

সকালের সুষম খাবার

সকালের সুষম খাবার আমাদের শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন সকালে ঘুম থেকে উঠি, তখন আমাদের পাকস্থলী খালি থাকে। তাই আমাদের সবার প্রথমে যে কাজটি করতে হবে, সেটি হলো ঘুম ভাঙার পর ফ্রেশ হয়ে সকালের নাশতা খাওয়া সেরে নিতে হবে। কোন অবস্থাতেই খালি পেটে থাকা যাবে না। তবে সকালের খাবারটি যেন সুষম হয়, সেদিকে আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই সকালবেলা ভাত খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। সকালের খাবারে ভাত সুষম খাবারের তালিকায় রাখা যায়,কারণ এতে থাকা শর্করা আমাদের দেহে প্রয়োজনীয় শর্করার চাহিদা পূরণ করে থাকে। তবে পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন রুটি, পরোটা,পাউরুটি, কিংবা খিচুড়ি। আমিষের চাহিদা মেটানোর জন্য খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন দুধ, ডিম, ২/৩ পিস মাংস ও সবজি।
আরোও পড়ুনঃ শর্করা জাতীয় খাবারের তালিকা কি কি

দুপুরে সুষম খাবার তালিকা

আমরা সাধারণত সকালের নাস্তার পর দুপুরের খাবার খেতে লেট করে ফেলি।কিন্তু আপনি যদি আপনার স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে চান তাহলে খাবারের টাইম মেইনটেইন করতে হবে। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত সকালের নাস্তা যেন ১০টার আগে করা হয় এবং দুপুরের খাবার যেন ২টার মধ্যে খাওয়া হয়। আমাদেরকে দুপুরের খাদ্য তালিকায় এক কাপ ভাত এর সঙ্গে ডাল, ডিম কিংবা এক থেকে দুই টুকরা মাছ এবং মাংস ও সবজি খেতে হবে। এই খাবারগুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ এবং প্রোটিন। তাই আমরা যদি এই খাবারগুলো প্রতিদিন দুপুরের সুষম খাবার তালিকায় রাখি, তাহলে আমাদের শরীরের আমিষ ও প্রোটিন এর পুষ্টি চাহিদাগুলো পূরণ করা সম্ভব।
আরোও পড়ুনঃ কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর করার খাবার

রাতের সুষম খাবারের তালিকা

আমরা অনেকেই আছি যারা রাতে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ি। কিংবা অনেকেই আছেন রাতে কম খাবার খেয়ে থাকি। আমাদেরকে এই অভ্যাসটি পরিবর্তন করতে হবে, কারণ রাতের খাবার না খেলে দৈনিক প্রতি বেলার প্রাপ্ত যে পুষ্টি চাহিদা শরীরের জন্য প্রয়োজন সেটি পূরণ হয় না। তাই আমাদের সবারই উচিত প্রতিদিন রাত ১০ টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নেওয়া। রাতের সুষম খাবারের তালিকায় আমাদেরকে রাখতে হবে এক কাপ ভাত কিংবা রুটি। আর এর সাথে রাখতে হবে ডিম, ডাল বা ১/২ পিস মাছ বা মাংস, সালাদ এবং সবজি।

আমরা অনেকেই আছি যারা মাছ, মাংস খাওয়ার প্রতি অনিহা প্রকাশ করি। আমাদেরকে কিন্তু এই অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে। কেননা এই খাদ্যগুলো কম গ্রহণ করলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে শুরু করে এবং শরীরের শক্তি কমে যেতে থাকে। এছাড়াও শরীরের পুষ্টির পরিমাণ কমে যায়। যার ফলে শরীর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই আমাদের সবারই উচিত প্রতিদিন সুষম খাবারের তালিকায় প্রাণিজ প্রোটিন, আমিষ, শর্করা, ভিটামিন ইত্যাদি সঠিক পরিমাণে রাখা এবং সময়মত গ্রহণ করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *